দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাজাপুর এসসি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী ধর্মীয় শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায় চার বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন-ভাতা নিয়মিত তোলেন। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসের নজরে থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কারণ, শিক্ষক প্রদীপ কুমারের স্ত্রী চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিনি নিজেও চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক। সরেজমিনে রাজাপুর এসসি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে সহকারী শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায়কে প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায়ও তার অনুপস্থিতির চিত্র পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে এসসি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রদীপ কুমার যে কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন না এটা সবাই জানেন। শিক্ষা অফিসকেও জানানো হয়েছে। কেউ কিছুই বলে না। আমি একা কী করব? আমি কিছু বলতে গেলে আমার ওপর চাপ আসবে। তাই সবার মতো আমিও চুপ আছি।’
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ধর্মীয় শিক্ষক প্রদীপ কুমার স্কুলে অনুস্থিত থেকেও কিছুদিন পর পর এসে এক সঙ্গে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন এবং তার বিষয়ে ক্লাস নিতে তার বদলি হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা বেতন দিয়ে সঞ্জয় কুমার নামে এক ছেলেকে রেখেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক বলেন, প্রদীপ কুমার স্কুল তো ফাঁকি দেয়ই, সেটা বলতে গেলে হুমকি আসে। তাই আমরা আর কিছু বলতে পারি না।
এসসি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, প্রদীপ স্যারকে আমরা তো স্কুলে দেখি না । তার বদলে ধর্ম ক্লাস আমাদের সঞ্জয় স্যার নেয়। তবে প্রদীপ স্যার কিছুদিন পর পর স্কুলে আসেন। কিন্তু দেখি ঘণ্টাখানেক থেকে চলে যান।
অভিযুক্ত প্রদীপ কুমারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আর কিছুদিন পরে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এতদিন চলে গেল কিছু নেই এ সময় কেন এমন হলো বুঝছি না। নির্বাচনের আগে আমার সঙ্গে কেউ চক্রান্ত করছে বলে তিনি উল্টো অভিযোগ তোলেন।
এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুর হক বলেন, স্কুলের শিক্ষকের ছুটির বিষয়টা প্রধান শিক্ষক দেখেন, আমরা তো দেখি না। আমরা শুধু মনিটরিং করি। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে আমি ডেকেছি, তার সঙ্গে বসে সব আলোচনা করে বিষয়টা দেখব।