অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাত আসামিকে রিমান্ড শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এ মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাময়িক বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আরও ছয় আসামি এখনো রিমান্ডে রয়েছেন।
কারাগারে পাঠানো সাত আসামি হলেন টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশের করা মামলার সাক্ষী বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আইয়াস। গত ১২ আগস্ট আদালত এ সাত আসামির প্রত্যেককে ৭ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে সাত আসামিকে আদালতে আনা হয়। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের পক্ষ থেকে তাদের নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করার পর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৪ এর বিচারক তামান্না ফারাহ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা, তার সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথ ও সিফাতের ব্যবহৃত ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভসহ ২৯টি উপকরণ আজ র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তার হেফাজতে নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। গত বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, সিনহা হত্যার ঘটনা সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্যচিত্র পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তির বক্তব্য, আলামতসহ সবকিছু যাচাই-বাছাই করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা।
তদন্ত কমিটি সময় পেল আরও ৭ দিন : সিনহা নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটিকে আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হলো। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটির সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও সাত কর্মদিবস বাড়ানো হয়েছে, যা শেষ হবে ৩১ আগস্ট।’
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেনÑ কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) একজন প্রতিনিধি এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি।
গত ৩১ জুলাই কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। পরে গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরদিন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।