বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

তৃতীয় দিনেও আমরণ অনশনে জাবি ছাত্রলীগের দুই নেতা

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১০ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নতুন কলা ভবনের পশ্চিম পাশের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তিসহ তিন দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এনামুল হক। পরে সেদিন রাতে একই দাবিতে অনশনে যোগ দেন বাংলা বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

তাদের দাবিগুলো হলো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং দীর্ঘদিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।

অনশনের বিষয়ে এনামুল হক এনাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ফেলার ৮ দিন পরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের উচিত ছিল মুছে ফেলার সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেওয়া। যেহেতু ছবি মুছে ফেলার সাথে জড়িতরা বিষয়টি স্বীকার করেছেন সেহেতু উচিত ছিল তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া। প্রশাসন এত দেরিতে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করায় আমার সংশয় ছিল বিচারেও গড়িমসি হতে পারে। এজন্য আমি শুরু থেকেই অনসনে বসেছি। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।

এদিকে শনিবার দুপুর দেড়টায় অনশনকারী দুই ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’। এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘অনশনকারীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে তাদের কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে ব্যঙ্গচিত্র অঙ্গনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো গোষ্ঠীর ইন্ধন আছে কিনা- সেটাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী এবং সদস্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও অধ্যাপক আইরিন আক্তার প্রমুখ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দেয়ালচিত্র আঁকা ছিল। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সেখানে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রাফিতিটি মুছে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এ ছাড়া কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমানকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ব্যাঙ্গচিত্রটি মুছে ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকা হয়েছে। এটাও তদন্তের একটি প্রক্রিয়া। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারব।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত