শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

নারী ফুটবল লিগ শিরোপা জিতে ইতিহাস নাসরিনের

আপডেট : ২৮ মে ২০২৪, ০৯:২১ পিএম

দেশের নারী ফুটবল ইতিহাসের সেরা কে! সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। বরাবরের মতো নিজের সেরাত্বের প্রমাণ মুখে নয়, গোলের মালা গেঁথে দিলেন সাবিনা খাতুন। জাতীয় দলের অধিনায়ক ১৭ গোল করে সেরা গোলদাতা হয়েছেন মঙ্গলবার শেষ হওয়া নারী ফুটবল লিগে। ঢাকা রেঞ্জার্সের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে একাই করেছেন পাঁচ গোল। কেবল নিজেই সেরা হননি, নাসরিন স্পোর্টস অ্যাকাডেমির নামটাও লিখে দিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। ঢাকা রেঞ্জার্সকে ১৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী ফুটবল লিগের শিরোপা জিতেছে নাসরিন স্পোর্টস অ্যাকাডেমি।

৮ ম্যাচে সাত জয় ও এক ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে নাসরিন জিতেছে শিরোপা। ১৯ পয়েন্টে আগের দুবারের মতো রানার্স-আপ আতাউর রহমান ভ‚ইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব। আর নবাগত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এফসি ১৮ পয়েন্টে হয়েছে তৃতীয়। 

সেরা গোলদাতার দৌড়ে এবার বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা। মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে তার গোলসংখ্যা ছিল ১২। ১৫ গোল করে শীর্ষে ছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের স্ট্রাইকার সাগরিকা। শিরোপা নিশ্চিতে নাসরিনের প্রয়োজন ছিল স্রেফ এক পয়েন্ট। তবে সাবিনারা জয়েই শিরোপা উদযাপনের লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিলেন। নিজের ব্যক্তিগত রেকর্ডের হাতছানিকে এক পাশে রেখে সাবিনা চেয়েছেন দলের জয় নিশ্চিত করতে। তাই নিজে করার চেয়ে সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোতেই মনোযোগী ছিলেন। তবে অধিনায়ককে সেরা করতে সতীর্থরা উঠেপড়ে লাগেন। একের পর এক সুযোগ তৈরি করে দিতে থাকেন। আর নিজের সবচেয়ে পছন্দের কাজটা সাবিনা করতে থাকেন মনের আনন্দে। তাতেই সাগরিকাকে ছাড়িয়ে যান তিনি। 

২০১১-১২ মৌসুমে অনুষ্ঠিত প্রথম নারী লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন সাবিনা। সেবার চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়ে করেছিলেন ২৫ গোল। এরপর ২০১৯-২০ মৌসুমেও সেরা হন তিনি। বসুন্ধরা কিংসকে প্রথম শিরোপা স্বাদ দিতে করেছিলেন ৩৫ গোল। এ নিয়ে তৃতীয়বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন ৩০ বছরের সাবিনা। লিগে গোলসংখ্যাও হয়ে গেল ১৫১টি। অনুজদের দাবিটা তাই এবারও মিথ্যে প্রমাণিত হলো সাবিনার কীর্তিতে। 

নিজের রেকর্ডকে কখনই বড় করে দেখেন না ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানোর বাংলাদেশের অধিনায়ক। তার কাছে দলীয় সাফল্যটাই বড়। নাসরিন, যারা কিনা দলবদলের আগে একটিবারের জন্যও শিরোপার স্বপ্ন দেখেনি, তাদের শিরোপা জিতিয়ে ভীষণ খুশি সাবিনা। কারণ অনেকগুলো। মাঝারি সারির নাসরিনকে সর্বজয়ী করে তুলতে ভেতরে ভেতরে তার অবদান অনেক। লিগের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এবার দল না গড়ায় সাবিনাসহ সে দলে খেলা জাতীয় দলের একঝাঁক তারকার লিগে খেলাই অনিশ্চিত ছিল।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সাবিনাদের ঠাঁই হয় নাসরিনে। দলটিকে শিরোপা এনে দিতে পেরে খুশি সাবিনা, ‘আমার মনে হয়, গত তিন আসরের চেয়ে এবারের লিগটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আসাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বেড়েছে। যদি ভালো ভালো দল আসে, তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে। এবার ৯টা টিমের খেলা যদি দেখেন, আমার তো মনে হয়, বেশ ভালো একটা লিগ হয়েছে।

জামালপুর কাচারিপাড়া একাদশ বাদে বাকি টিমগুলো বেশ ভালো ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের ফল ৩-১, আতাউরের সঙ্গে ২-২, সদ্যপুস্কুরিনীর সঙ্গেও ভালো ম্যাচ হয়েছিল। উত্তরা এফসির বিপক্ষে আমরা অনেক পরে গোল পেয়েছি। সব মিলিয়ে এবার ভালো লিগ হয়েছে এবং দলকে শিরোপা এনে দিতে পেরেছি।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত