ভারতের ওড়িশা রাজ্যে অবস্থিত পুরীর জগন্নাথ মন্দির। ৪৬ বছর পর রবিবার (১৪ জুলাই) ঠিক দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিটে ‘পবিত্র মুহূর্তে’ খোলা হয় এই মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের দরজা। রবিবার রত্ন ভাণ্ডারের দরজা খোলার আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল ৬টি বড় সিন্দুক। অবশ্য আজ সেই রত্ন ভাণ্ডারে শুধু বিশেষজ্ঞ কমিটির দলের সদস্যরা ঘুরে দেখবেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, বিধানভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে পুরীর রত্ন ভাণ্ডার খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সেই মতো পুরীর রহস্যময় এই কোষাগারের দরজা আজ খোলা হলো। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
এর আগে এই মন্দিরের কোষাগারের দরজা সর্বশেষ ১৯৭৮ সালে খোলা হয়েছিল। এদিকে রত্ন ভাণ্ডারে থাকা গয়না ও অন্যান্য সম্পদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আরবিআইয়ের (রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া) সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। রত্ন ভাণ্ডারের সামগ্রীর তালিকা তৈরির সময় রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে ১৯৭৮ সালে যখন রত্ন ভাণ্ডারের সামগ্রীর তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, সেবার ৭০ দিন লেগেছিল সেই কাজ সম্পন্ন করতে। তবে এবার ডিজিটাল ক্যাটালগ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এর আগে ১৮০৫ সালে প্রথমবার সরকারিভাবে জানা গিয়েছিল যে পুরীর রত্ন ভাণ্ডারে কী আছে। এই রত্ন ভাণ্ডার আদতে ১১.৮ মিটার উঁচু একটি মন্দির। প্রায় ২০৯ বছর আগে পুরীর তৎকালীন কালেক্টর চার্লস গ্রোম দাবি করেছিলেন রত্ন ভাণ্ডারে ময়ূরপঙ্খি আকারের মুকুট থেকে শুরু করে সুন্দর কারুকার্য করা সোনা ও রুপার গয়না আছে। এছাড়াও শতাধিক মোহর থাকার কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন।
এরপর ১৯৫০ সালে শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডিনিস্ট্রেটিভ অ্যাক্ট কার্যকর করা হয়। সেই সময় রত্ন ভাণ্ডারের সোনা-দানার পরিমাণ আরও অনেক গুণ বেশি ছিল।
৪৬ বছর আগের তথ্য অনুযায়ী, পুরীতে জগন্নাথ দেবের রত্ন ভাণ্ডারে মোট ৪৫৪টি সোনার গয়না, যার ওজন আনুমানিক ১২,৮৩৮ ভরি এবং ২৯৩টি রুপার গহনা রয়েছে, যার ওজন ২২,১৫৩ ভরি। এরমধ্যে রত্ন ভাণ্ডারের বাইরের যে অংশ রয়েছে, তাতে রাখা আছে জগন্নাথদেবের মণি-মুক্তা জড়ানো সাজসজ্জা। ৭৯টি সোনার গহনা, ৩৯টি রুপার গহনা আছে। সঙ্গে রয়েছে নিত্য ব্যবহারের আরও সোনাদানা। ব্রক্ষ্মজ্যোতি হিরা, বলরামের নীলা, সুভদ্রার মণিমুক্তাও রয়েছে। ভিতরের ভাণ্ডারে কী কী রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ৩৫০-রও বেশি সোনার গয়না ও ২৩০টিরও বেশি রুপার গহনা আছে বলে জানা যায়।