বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ভারতে গিয়ে ফিক্সিং শিখে ধ্বংস হয়ে যায় ভিনসেন্টের ক্যারিয়ার

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম

লু ভিনসেন্টকে মনে পড়ে? একটা সময় তাকে বলা হতো নিউজিল্যান্ডের অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার। জাতিগতভাবেই কিউইরা ভীষণ সৎ। কিন্তু ভিনসেন্ট অসৎ পথে পা বাড়িয়ে নিজের সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেন। ভারতে গিয়ে ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়া এই ক্রিকেটার ২৪ বছর পর সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২৩টি টেস্ট এবং ১০২টি ওয়ানডে খেলা ভিনসেন্ট ফিক্সিংয়ের অন্ধকার জগতে প্রবেশ করেছিলেন ভারতের নিষিদ্ধ লিগ আইসিএল দিয়ে। ভিনসেন্টের কথায়, ‘ভারতে যখন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল) খেলতে গিয়েছিলাম, তখন আমি মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় ছিলাম না। আমার এই দুর্বলতাকেই তারা কাজে লাগিয়েছিল। আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল ফিক্সিংয়ের কালো দুনিয়ায়।’

শুরুতে ভিনসেন্টের মনে হয়েছিল, এমন একটা গোপন চক্রে তিনি জড়িয়েছেন যার কথা কেউ জানতে পারবে না। তাই ভয় পাননি। কিন্তু ধীরে ধীরে তার উপলব্ধি হয় কত বড় ভুল করে ফেলেছেন। ভিনসেন্ট বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মজা হতো। ভাবতাম, কেউ জানতে পারবে না। কোনো সমস্যা হলে আমাকে উদ্ধার করার জন্য লোক আছে। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম, এমন একটা চক্রে জড়িয়ে গেছি, যেটা থেকে আর বের হতে পারব না।’ একটা সময় ভিনসেন্টকে বলা হতো নিউজিল্যান্ডের অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার।

এই সত্য উপলব্ধির পর ভিনসেন্ট সিদ্ধান্ত নেন ফিক্সিংয়ের চক্র থেকে বের হওয়ার। তিনি নিজের সব অপকর্মের কথা ফাঁস করে দেন। প্রকাশ্যে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর খেসারত হিসেবে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ভিনসেন্টকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০৭ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সেই শেষ হয়ে যায় তার ক্যারিয়ার। টেস্টে ও ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনটি করে মোট ৬টি সেঞ্চুরি করেছেন ভিনসেন্ট, একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে।

ভিনসেনের শৈশব মোটেও সুখকর ছিল না। ওইটুকু বয়স থেকেই বাবা-মায়ের চরম দ্বন্দ্বের সাক্ষী হয়েছেন। এমনকী মাত্র ১২ বছর বয়সে তাকে নিজের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। কাউকে পাশে পাননি। এসবের প্রভাব তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফলেছিল। সেই কারণেই অর্থের লোভ সামলাতে পারেননি বলে স্বীকার করেছেন ভিনসেন্ট। তবে এখন ভিনসেন্ট বদলে গেছেন। তিনি ফিক্সিংয়ের দুনিয়া থেকে বহুদূরে।

ভিনসেন্টকে বিশেষ একটি দায়িত্বও দিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তিনি। আর কোনো তরুণ ক্রিকেটার যাতে ফিক্সিংয়ের অন্ধকার দুনিয়ায় জড়িয়ে না পড়েন, সে বিষয়ে তিনি ক্রিকেটারদের উদ্বুগ্ধ করেন। তাদেরকে নিজের জীবনের গল্প শোনান, সতর্ক করে দেন। এখনও তার মনে পড়ে যায় ২০ বছর আগে ভারতে আইসিএল খেলতে যাওয়ার কথা। সেবার তিনি ভারতে না গেলে, ক্যারিয়ারটা হয়তো রঙিন হয়ে উঠত।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত