সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

পেশাদারিত্বের দীক্ষা নিন ছাত্রজীবনেই

আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২২ এএম

ছাত্রজীবন হলো পেশাজীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের সময়। সেজন্য ছাত্রাবস্থাতেই পেশাদারি আচরণে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হয়, বিশেষ করে পড়াশোনার শেষাংশে। ছাত্রাবস্থাতেই যদি পেশাদারি মনোভাব গড়ে ওঠে তাহলে কর্মস্থলে অহেতুক বিব্রত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। লিখেছেন শাহরিয়ার নাফিস

কোনো কিছু ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না

পেশাজীবনে কোনো কিছুই ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। যেকোনো কর্মস্থলে সবাই একটি বড় দলে কাজ করে। সেই বড় দলের মধ্যে ছোট ছোট আরও কয়েকটি দল থাকে, কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে। কোনো কাজ যেহেতু কেউ একা করে না ফলে সেই কাজের সমালোচনাকে কখনো নিজের সমালোচনা হিসেবে নেবেন না। দলের একজন সদস্য হিসেবে চিন্তা করবেন কাজের এই সমালোচনাটি যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক। যদি যৌক্তিক হয় তাহলে সমালোচনাকে বিবেচনায় নিয়ে দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে কাজের মানকে উন্নত করবেন। আর যদি মনে হয় অযৌক্তিক সমালোচনা তাহলে বাদানুবাদে না জড়ানোই ভালো। তবে যৌক্তিক-অযৌক্তিক এই বিবেচনা করার আগে অবশ্যই সমালোচনাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ ভাবার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।

নতুন কাজকে ভয় পাবেন না

কর্মক্ষেত্রে প্রায় সময় একই ধরনের কাজ করতে হয় এবং সেই কাজটি হয় পেশাসংক্রান্ত। তবে অবস্থার পরিবর্তনে যেকোনো সময় নতুন পরিস্থিতিতে নতুন কাজের দায়িত্ব আসতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন কাজকে ভয় পাবেন না। একে দায়িত্ববহির্ভূত কাজ হিসেবে ভাববেন না। নতুন কাজ বা দায়িত্ব সবসময় আত্মোন্নয়ন ও চাকরিতে পদোন্নতির সম্ভাবনা নিয়ে আসে। তা ছাড়া কাজের ক্ষেত্রে নিত্যনতুন বিষয় শেখার সুযোগ সহসা মেলে না। অথচ পদোন্নতির জন্য সবসময় একাধিক বিষয়ে নতুন দক্ষতার প্রয়োজন হয়। নতুন কাজকে তাই নিজের ক্যারিয়ারে একটি পালক যুক্ত করার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করতে শিখুন।

উদ্ভাবনী ক্ষমতার ব্যবহার করুন

নানান সমস্যার সমাধানে প্রথাগত সমাধান ব্যবহার না করে নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এর ফলে যদি সমস্যাটি সমাধানে আরও কম সম্পদ, সময় ও লোকবল ব্যবহৃত হয় তাহলে এটিই গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসেবে বিবেচিত হবে এবং শুধু আপনার কর্মক্ষেত্রেই নয়, ওই পেশাক্ষেত্রে আপনার একটি গ্রহণযোগ্যতা ও চাহিদা তৈরি হবে। তবে উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রয়োগের আগে খোঁজ নিতে হবে যে, এটি আগে কেউ ব্যবহার করেছে কি না আর এটি ব্যবহার করলে পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না।

অঙ্গীকার রক্ষা করুন

অঙ্গীকার রক্ষা করার ক্ষমতাকে পেশাদারত্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশাল কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন কাজ করেন। মূলত তারা একটি বিশাল কাজকে বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত করে নির্দিষ্ট সেই কাজটি করেন। সবার মিলিত কাজের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে চূড়ান্ত ফল। এ কারণে প্রত্যেকেই যার যার কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা খুবই জরুরি। তাই কোনো দায়িত্ব নিলে সেই কাজটি নির্দিষ্ট সময়ে সুসম্পন্ন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। কোনো কাজ নেওয়ার আগে নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকলে অঙ্গীকার ভঙ্গের ভয় থাকে না। যেমন কাজটি নির্দিষ্ট সময়ে করতে পারবেন কি না, করার জন্য যথেষ্ট লোকবল আছে কি না প্রভৃতি। যদি আপনার সক্ষমতা না থাকে এবং সময় অপর্যাপ্ত থাকে তাহলে কাজটি নেবেন না এবং আপনার অপারগতা প্রকাশ্যে প্রথমেই জানিয়ে দেবেন। কিন্তু একবার কোনো কাজ করার অঙ্গীকার করার পর তা রক্ষা করতেই হবে। কারণ এর ওপর নির্ভর করে গোটা প্রকল্পের সফলতা।

সততা সবার আগে

পেশাজীবনে সততা বজায় রাখা খুবই জরুরি। তবে শুধু পেশাজীবনে নয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনেও সততা বজায় রাখা খুবই জরুরি। তাই জীবনের সবক্ষেত্রে সততার চর্চা শুরু করুন। এতে পেশাজীবনে যেমন সহকর্মীদের শ্রদ্ধা অর্জন করবেন, তেমনি এড়িয়ে যেতে পারবেন নানা জটিলতা। 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত