প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজ শুক্রবার সাক্ষাৎ করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ বৈঠকে গুরুত্ব পাবে অন্তর্বর্তী সরকারের গণতন্ত্রে উত্তরণ, রোহিঙ্গা ইস্যু ও মানবাধিকার। এরপর একই ফ্লাইটে তারা কক্সবাজার যাবেন। সন্ধ্যায় সেখানে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস।
গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন ‘জাতিসংঘ মহাসচিব তার রমজান মাসের সংহতি প্রকাশের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন।’
জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। দু’টি ছোট শিশু গুতেরেসকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানায়। এরপর জাতিসংঘ মহাসচিব হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যান।
জানা গেছে, শুক্রবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। পরে জাতিসংঘ প্রধান সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
বৈঠকের পর গুতেরেস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য কক্সবাজার যাবেন। কক্সবাজার বিমানবন্দরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক গুতেরেসকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এরপর, কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। ইফতার শেষে ঢাকায় ফিরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অবস্থান করবেন গুতেরেস।
আগামীকাল শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেবেন।
শনিবার বিকেলে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি যুব সমাজের সাথে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদের সাথে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন।
একই দিন সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ প্রধানের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে গুতেরেস এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।