স্কুল ব্যাংকিং নীতিমালার আওতায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকা-ে শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি সম্পৃক্ত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল রবিবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর ও ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বরের দুটি সার্কুলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আর্থিক সেবার সঙ্গে পরিচিত করানো এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকা-ে অধিকতর সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক শাখার নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্কুল ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনয়নের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংককে তাদের প্রতিটি শাখার নিকটবর্তী কমপক্ষে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং সেবা-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হলো। এ নীতির আওতায় কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে জেলা বা উপজেলা অথবা ইউনিয়নপর্যায়ে কমপক্ষে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন-পূর্বক প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক শাখাকে তাদের নিকটবর্তী শাখার মাধ্যমে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা সরাসরি সেই ব্যাংক শাখা থেকে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা বা পরিষেবা গ্রহণ করার সুযোগ পাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচনের বিষয়ে অধিক্রমণ দূরীকরণে ব্যাংকগুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। হিসাব খোলা ও পরিচালনা, আর্থিক শিক্ষা ও এতদ্বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতনতা এবং প্রযুক্তিগত বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময়ে সময়ে জারি করা নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা বা উপজেলার স্কুল ব্যাংকিং-সংক্রান্ত কার্যক্রমের বিষয়ে ব্যাংক শাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অফিসকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অবহিত করবে এবং প্রতিবেদন দাখিল করবে। স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের অগ্রগতি (ব্যাংক শাখা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, শিক্ষার্থী হিসাবের সংখ্যা, লেনদেনের পরিমাণ এবং আর্থিক শিক্ষা কার্যক্রমের বিবরণসহ) সম্পর্কে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারির এফআইডি সার্কুলার অনুযায়ী ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টে প্রতিবেদন দাখিলসহ স্কুল ব্যাংকিং-সংক্রান্ত অপরাপর নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
শিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনা ও তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এই কার্যক্রমের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আরও উপযোগী করে তোলা। ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। প্রথম বছরে ২৯ হাজার ৮০টি স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয়। এর পরের বছর ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় ব্যাংকগুলোয় ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭টি হিসাব খোলা হয়। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব ও আমানতের পরিমাণ কিছুটা কমে আসছে।