চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের জেলেদের চাল (বিজিএফ) বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে বহরিয়া বাজারে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স এলাকায় ৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেদের চাল বিতরণকালে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরু ভূঁইয়া ও সহসভাপতি সুমন আহমেদ ভূঁইয়ার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন বহরিয়া এলাকার আক্কাস খাঁন, সুফিয়ান, আফজাল খান, বোরহান, রাব্বি গাজী, মুকসুদ মিজি, মহসীন মিজি, জায়েদ মিজি, মমিন হাওলাদার ও মন্টু মিজি।
আহতরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত রাব্বিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক।
সুমন আহমেদ ভূঁইয়ার অনুসারী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি মুকসুদ মিজি বলেন, গতকাল (রবিবার) থেকেই জেলেদের চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরু ভূঁইয়া আজ (সোমবার) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেদের আসতে নিষেধ করেন। এ কারণে কেউ আসেননি। কিন্তু দূরে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেছে নুরু ভূঁইয়ার লোকজন যাদের কোনো জেলে কার্ড নেই, তারা চালের বস্তা নিয়ে যাচ্ছেন। তখন এতে বাধা দিলে মারামারির সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়নের ৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেদের মধ্যে গতকাল সরকারি চাল বিতরণের সময় কার্ডহীন কিছু জেলে চাল নিতে চাইলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। এর একপর্যায়ে তারা লাঠিসোঁটা, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন।
নুরু ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা গতকালও উপস্থিত থেকে চাল বিতরণ করেছি। তখন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকজন চাল বিতরণের সময় সমস্যা তৈরি করেছে। তাদের আজকে আসতে নিষেধ করেছি। কিন্তু তারাই আজকে এখানে হামলা ও মারামারির সৃষ্টি করেছে। জেলে কার্ড ছাড়া চাল নিয়ে যাওয়াসহ আমার বিরুদ্ধে যেসব কথা বলা হচ্ছে এগুলো ঠিক না।’
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক মোহাম্মদ মুকবুল হোসেন বলেন, ‘চাল বিতরণকালে আমি পরিষদের দোতলায় ছিলাম। এ সময় পরিষদের বাইরে মারামারি শুরু হয়। তবে কী নিয়ে বাইরে মারামারি হয়েছে, তা আমি জানি না। বর্তমানে ইউনিয়নের চাল দেওয়া বন্ধ রয়েছে।’
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি বাহার মিয়া বলেন, ঘটনার সময় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তায় দুপক্ষের লোকজন কাচের বোতল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এদিকে ঝিনাইদহের শৈলকূপায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। গত রবিবার রাতে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের বহরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বহরিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা সিয়াম মোল্ল্যার সঙ্গে একই গ্রামের বিএনপি নেতা সুরাবের সমর্থকদের উত্তেজনা চলে আসছিল। গত রবিবার রাতে তাদের দুই সমর্থকের মধ্যে কথা-কাটাকাটির জেরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে প্রায় ১৫ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। শৈলকূপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।