বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছেন, অনেকে জীবন হারিয়েছেন, অনেকে হাসপাতালে, বাড়িতে কাতরাচ্ছেন। এই ঘটনায় যারা জড়িত, সেই জালিমদের বিচার নিশ্চিত দেখতে চাই। গড়িমসি করে সময় ক্ষেপণ নয়, স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্দেশকারী, পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী সবাইকে শাস্তির আওতায় দেখতে চাই।
গতকাল সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব চত্বরে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত সকল হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘অবিলম্বে আন্দোলনে শহীদ সেলিম তালুকদারের হত্যাকারী জালিমদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচার নিয়ে কোনো সময় ক্ষেপণ মেনে নেওয়া হবে না।’
পথসভা শেষে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সেলিম তালুকদারের সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুকন্যাকে দেখার জন্য জামায়াতের আমির তার বাসা ঝালকাঠি পৌর শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় যান।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এই সন্তান জাতির সম্পদ।’ শিশুটি রমজান মাসে জন্মগ্রহণ করায় এবং তার বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে জামায়াতের আমির শিশুটির নাম সাইমা সেলিম প্রস্তাব করলে পরিবারের সদস্যরা তা গ্রহণ করেন। শিশুটির লালন-পালন, শিক্ষা ও ভবিষ্যতে তার বিয়েসহ যাবতীয় ব্যয়ভার জামায়াত বহন করবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমরা শহীদদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। শহীদ সেলিমের পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব।’
জামায়াতে ইসলামী ঝালকাঠি জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার ও ঝালকাঠি-২ আসনের জামায়াতের এমপি প্রার্থী শেখ নেয়ামুল করিমসহ অন্য নেতৃবৃন্দ। এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সন্তান সেলিম তালুকদার। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তখন সেলিমের স্ত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ৯ মার্চ শহীদ সেলিমের স্ত্রী সুমি আকতার ঝালকাঠি শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
