বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সিজারের পর কোমর ব্যথা

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম

সিজারিয়ান পরবর্তী মায়েরা কোমরে ব্যথায় ভোগেন না এমনটা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই ব্যথা প্রসবের কয়েক ঘণ্টা পর শুরু হয়ে বছরব্যাপী দেখা যায়।

কারণ : সন্তান জন্মদানের সময় রিলাক্সিন নামক হরমোন নিঃসরিত হয়। এই হরমোনের প্রভাবে শরীরের জয়েন্ট এবং লিগামেন্ট কিছুটা আলগা হয়ে যায়, যাতে গর্ভের শিশুকে ধাক্কা দেওয়া সহজ হয়। সিজার হলেও শরীরে এই হরমোন নিঃসরণ হয়। জয়েন্ট এবং লিগামেন্ট আলগা হলে বায়োমেক্যানিক্যালিভাবে কোমরে চাপ দেওয়া সহজ হয়ে যায়, ফলে একটু বেশি কাজকর্মের সময় কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন বহন। গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধি পায়। বাড়তি ওজনের কারণে একজন গর্ভবতী নারীর স্বাভাবিক চলাফেরায় যে ভারসাম্যের কেন্দ্রবিন্দু থাকে, তা স্থানান্তরিত হয়ে মেরুদ- ও কোমরে চাপ পড়তে পারে, যার কারণে কোমর ব্যথা হয়। সন্তানকে সঠিকভাবে কোলে না নেওয়ার কারণেও কোমরে ব্যথা হতে পারে। পাশাপাশি সন্তানকে বিছানা থেকে তুলে কোলে নেওয়ার জন্য মাকে ঝুঁকতে হয়। এই কারণে  মেরুদ-ে চাপ পড়ার ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে স্তন্যপান করানোর কারণে ঘাড়ে চাপ পড়ে এবং ধীরে ধীরে ঘাড়ে ব্যথার সৃষ্টি করে। সিজারিয়ানের আগে যদি কোনো অপারেশনে এনেস্থেসিয়া হয়, তার ওপর ও প্রসব পরবর্তী কোমর ব্যথা হবে কি না, নির্ভর করে। অস্ত্রোপচারের জায়গাটিতে এপিডুরাল বা স্পাইনাল ব্লক দেওয়া হতে পারে। এপিডুরাল ক্যাটাগরিতে, ডাক্তার মায়ের মেরুদ-ের আশপাশের জায়গায় এনেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেন। অন্যদিকে, স্পাইনাল ব্লকে, মেরুদ-ের খুব কাছে এনেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেওয়া হয়। স্পাইনাল ব্লক খুব দ্রুত কাজ করে। এপিডুরালের কার্যকারিতা শুরু হতে ২০ মিনিটের মতো লাগে। কোন ক্যাটাগরির এনেস্থেসিয়া ব্যবহার করা হয়েছিল, তা প্রসব পদ্ধতিকেও প্রভাবিত করতে পারে।

যার কারণে কোমর ব্যথাসহ অন্যান্য জায়গাতেও ব্যথা অনুভূত হয়।

করণীয় : বাচ্চাকে কোলে তোলার সময় ঝোঁকা যাবে না। পিঠ সোজা রাখুন। বাচ্চাকে কোলে থেকে নামিয়ে বিছানায় বা সমতলে রাখতে প্রয়োজনে কারও সাহায্য নিন। স্তন্যপানের সময় আপনার পিঠ সোজা রাখুন। স্তন্যপানের জন্য উপযুক্ত জায়গা বেছে নিন। হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ব্যথা খানিকটা কমে যায়। কোমরে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে সেক দিতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে হালকা ব্যায়াম শুরু করা। কোমরে ব্যথা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তাহলে ফিজিওথেরাপিস্টের সাহায্য নিন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত