বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা এ দেশের মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ৩১ দফার মাধ্যমে। আমরা তা জনগণের সমর্থনে বাস্তবায়ন করব। আমরা এমন সময় দেশ ও জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করি, যখন স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কথা বলার সাহস করতো না কেউ। কিন্তু আমরা স্বৈরাচারীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ৩১ দফা দিয়েছি। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার করবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তার এই বক্তব্য একযোগে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর থেকে একযোগে প্রচারিত হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটি দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে। তারেক রহমান এ কর্মশালায় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের একটানা সাড়ে পনেরো বছরের শাসনামলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ কোনো না কোনোভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। কারণ, তারা তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি একটি রাজনৈতিক দলের সফলতা দেখি, যখন আমাদের (বিএনপি) মিছিলে অনেক লোকজন অংশগ্রহণ করেন, মিছিলও হয় অনেক লম্বা। আমি আজ থেকে ৭ মাস আগে বলেছিলাম অদৃশ্য অনেক শক্তি, অদৃশ্য অনেক শত্রু রয়েছে। আজকে তা সত্য হচ্ছে। অদৃশ্য অনেক শত্রু, প্রতিপক্ষ আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে।’
এ কর্মশালায় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমাদের মাঝে কেউ যদি জনসমর্থন কমানোর মতো কাজ করে তাহলে অবশ্যই তাকে এড়িয়ে যেতে হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, যতগুলো রাজনৈতিক সরকার বাংলাদেশ পরিচালনা করেছে, সেই হিসেব করা হলে দেখা যাবে জনগণের কল্যাণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে বিএনপি। এই দলের প্রতি কোটি- কোটি মানুষের আস্থা রয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিএনপি কাজ করেছে। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, বিদেশে রপ্তানি, খাল খনন, কৃষকের পানি সমস্যার সমাধান করা, নারী শিক্ষার বিস্তার ও তাদের ক্ষমতায়ন এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশকে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করার জন্য কোটি- কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, শিল্পায়নের জন্য শিল্পখাতের সংস্কারেও কাজ করেছে বিএনপি।’
গণতান্ত্রিক একটি দেশে ভিন্ন মত থাকতেই পারে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করব। সবাইকে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার অভিমতও ব্যক্ত করেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আকতার বানু, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, বিএনপির তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির চেয়ারম্যান মাহমুদা হাবিবা, গণশিক্ষা বিষয়ক সহসম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রইচ উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পঞ্চগড় পৌরসভা চত্বরে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিভাগ এ কর্মশালার আয়োজন করে। দিনব্যাপী কর্মশালায় জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার পাঁচ শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।