ইন্দোনেশিয়ার ৮ কোটি স্কুলশিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহের এক উচ্চাভিলাষী কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল দেশটির সরকার। তবে বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ছে। চলতি সপ্তাহে, কর্মসূচির খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে দুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮০ জন শিক্ষার্থী। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরকারি খাবার থেকে বিষক্রিয়ার সর্বশেষ ঘটনা ছিল এটি। ফলে, প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর বিশেষ নীতিটি দিনে দিনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
কর্র্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, খাবার তৈরি ও পরিবেশনায় অবহেলার কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, রান্না, প্যাকিং ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য, উপস্থিতি ও শিক্ষাগত সাফল্য বৃদ্ধিতে ফ্রি মিল কর্মসূচি যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই কর্মসূচি উলটো শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে আরেকটি উপাদান যুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ফ্রি মিল কর্মসূচিটিকে অপুষ্টিজনিত রোগ, স্টান্টিং রোধের কৌশল হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। দেশটিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি পাঁচটি শিশুর একটি এতে আক্রান্ত হয়।
সুবিয়ান্তো বলেছিলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুরা ঠিকমতো বেড়ে উঠবে। তবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক আইএসইএএস ইনস্টিটিউটের অতিথি গবেষক মারিয়া মনিকা উইহারজা বলেছেন, জরুরিভিত্তিতে বিনামূল্যের খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন এ ধরনের কোনো প্রমাণ এখনো আমাদের হাতে নেই। আরও গুরুতরবিষয় নিয়ে উদ্বেগে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইন্দোনেশিয়াতে এর আগেও দেখা গেছে, বৃহৎ আকারের সরকারি উদ্যোগে ব্যাপক দুর্নীতি সংঘটিত হয়। দেশটির অডিট বোর্ডের গবেষণা বিশ্লেষক মুহাম্মদ রাফি বাকরি বলেছেন, ফ্রি মিল কর্মসূচিটির বাজেট এতই বেশি যে- সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সেটা সোনার ডিম পাড়া হাঁস হয়ে উঠতে পারে।