মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান

সময়মতো নির্বাচন না হলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৩ এএম

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন প্রতিশ্রুত সময়সীমার মধ্যে না হলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। ফলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, টেকসই বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য।

গতকাল শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘বিদেশি বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির  চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারত পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বড় শঙ্কার কারণ না হলেও তা উদ্বেগজনক। যুদ্ধ অবস্থায় চলে গেলে ভারতের সামরিক ব্যয় বেড়ে যাবে, ফলে ভারতের সঙ্গে আমাদের শুল্ক সুবিধা ব্যাহত হওয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে। কেননা পরমাণু শক্তির অধিকারী দুটি দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে। তিনি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ বড় অংকের পণ্য আমদানি করে। সে দেশে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। সে দেশে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে বাংলাদেশের লেগেছিল ৪০ বছর। পরের ৭ বছরে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত যদি সামরিক খাতে বেশি মনোযোগী হয় তাহলে তাদের বাণিজ্য প্রভাবিত হতে পারে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও পড়তে পারে।

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি শেষ কথা নয়। বিনিয়োগ আনতে হলে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো কারণে নির্বাচন বিলম্বিত হলে তা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।

সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হলেও প্রাপ্ত প্রতিশ্রুতি খুব বেশি নয়। এ সম্মেলনে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের পর্যায়ে উন্নীত করার আশাবাদ প্রকৃতপক্ষে সম্ভব নয়। তবে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ অব্যাহত থাকলে সে সময়ের মধ্যে আমরা থাইল্যান্ডের কাছাকাছি যেতে পারি। বিগত সরকারের আমলে বিনিয়োগ পরিসংখ্যানে অনেক অবাস্তব চিত্র  দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমাদের দেশে বিদেশি বিনিয়োগ ৩৩ বিলিয়ন ডলার আসার কথা উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে এসেছে ১১ বিলিয়ন ডলার। ভিয়েতনামের বর্তমান এফডিআই স্থিতি ৩৬০ বিলিয়ন ডলার হলেও বাংলাদেশে মাত্র ২২ বিলিয়ন ডলার।

ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও সাংবাদিক জাকির হোসেন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত