মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

স্বল্প খরচে অধিক লাভ

মুরাদনগরে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৮ পিএম

অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৃষকেরা ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ঝুঁকিহীন, কম পরিশ্রমে বেশি ফসল, অল্প সেচ ও সার প্রয়োগের সুবিধা থাকায় গত বছরের তুলনায় এবছর ৫৯ হেক্টর জমিতে
বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে। ধীরে ধীরে ভুট্টা চাষ এখন এ অঞ্চলের প্রধান আবাদি ফসলে পরিণত হচ্ছে। চাষিরা বোরো চাষ কমিয়ে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষে মনোনিবেশ করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর ফলন বেশ ভালো হবে বলে আশা করছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ভুট্টার চাষে অনুকুল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর উপজেলায় ৫৪৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছিল। এবছর ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫০ হেক্টর হলেও তা বেড়ে চাষ হয়েছে ৬০৫ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ধামাকা, বাজিমাত, মিরাকল, পায়ওনিয়র, বিএডিসি ভুট্টা-১, এনকে-৪০ সহ বিভিন্ন জাতের ভুট্টা। এবছর প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ মে.টন হিসাবে ৬০৫০ মে.টন ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার করিমপুর, কামাল্লা, রামচন্দ্রপুর, পাহাড়পুর, বাবুটিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঠজুড়ে কৃষকেরা ভুট্টা চাষ করেছেন। যা চোখে পড়ার মতো। এরই মধ্যে গাছে গাছে ফল এসেছে। কিছু কিছু জমিতে ভুট্টা পরিপক্ব হতে শুরু করেছে। যেগুলো পরিপক্ক হয়েছে সেগুলো হারভেস্ট করা হচ্ছে।

muradnagar, cumilla 29-04-2025 pc1

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫০ থেকে ১৬০ দিনের মধ্যে ভুট্টার ফলন পাওয়া সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সেচ, সার ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় আয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা।

উপজেলার করিমপুর গ্রামের ভুট্টাচাষি মুসা মিয়া বলেন, বোরো ধান চাষে খরচ অনেক বেশি লাভ কম। অথচ ভুট্টা চাষ করতে তেমন খরচ হয় না, পরিশ্রম কম কিন্তু লাভ বেশি। তাই ভুট্টা চাষ করেছি।

পাহাড়পুর এলাকার হাবিব মিয়া জানান, যে কোনো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষই এখন লাভজনক। এবার ২ বিঘা জমিতে তিনি ভুট্টা আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতিমন ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা দরে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে।

এবছর প্রথম ভুট্টা চাষ করা হাফিজ মিয়া জানান, তিনি প্রথমবারের মতো ৫০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। রোগ বালাইয়ের উপদ্রব কম, স্বল্প খরচে, কম সময়ে অধিক লাভ পাওয়ায় এখানকার কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ভুট্টা চাষিদের বিভিন্ন সহযোগিতাসহ সরকারি ভাবে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করি ভালো ফলন হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত