১৪ বছর বয়সে কেউ যদি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে মাঠে নেমেই অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক বোলারদের ছেলেখেলায় পরিণত করে ফেলেন, ৩৫ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন নিখুঁত সব ফ্লিক শটে—তাহলে সেটি যে কেবল বিস্ময় জাগাবে তা নয়, ছুঁয়ে যাবে আবেগের গভীরতম সুর। অন্তত ব্রায়ান লারার মনে যে ঝড় উঠবে, তা বলাই বাহুল্য।
‘প্রিন্স অব ত্রিনিদাদ’ খ্যাত ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন সেই ইনিংসের একটি হাইলাইটস ভিডিও, যেখানে ঝড় তুলেছেন বৈভব নামের এক ভারতীয় কিশোর। ইনস্টাগ্রাম ক্যাপশনে লারা লিখেছেন,
"আমি কি মন ভরাতে পেরেছি? তুমি অবশ্যই আমার মন ভরিয়েছ।"
তিনটি বাক্যে লারা যেন প্রকাশ করেছেন নিজের মুগ্ধতা, বিস্ময় এবং গর্ব—একইসঙ্গে।
২০১১ সালে জন্ম বৈভবের, চার বছর আগে লারা যখন ব্যাট-প্যাড তুলে রেখেছেন, তখনও জন্ম হয়নি তাঁর এই ব্যাটিং অনুরাগীর। ছোটবেলা থেকেই ইউটিউবে লারার ব্যাটিং দেখে বেড়ে ওঠা বৈভব নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "আমার আদর্শ ব্রায়ান লারা। আমি তাঁর ৪০০ রানের ইনিংসটি বহুবার দেখেছি। তিনি হাল ছাড়েন না, ম্যাচ ছেড়ে যান না। আমি সেটাই শিখতে চাই।"
সোমবার রাতে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে তাঁর সেঞ্চুরিটি যেন সেই শিক্ষারই প্রমাণ। ৩৮ বলে ১০১ রান, যেখানে ছিল ১১টি ছক্কা ও ৭টি চার। ইনিংসজুড়ে তাঁর স্ট্রোক প্লে, বিশেষ করে ফ্লিক শটগুলো দেখে অনেকেই স্মরণ করেছেন লারার সেরা মুহূর্তগুলো। তবে সবচেয়ে বড় তুলনাটি করেছেন লারাই।
বৈভবের ইনিংসের মধ্য দিয়ে যেন নিজের অতীত দেখেছেন ব্রায়ান লারা। অবসর নেওয়ার পর গত ১৮ বছরে তিনি কখনো কোনো তরুণকে নিয়ে প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করেননি। বৈভবের মধ্যে যে বিনোদনের সেই স্বভাবসুলভ রাজকীয়তা, পরিণত ম্যাচ সেন্স ও নির্ভীকতা আছে—সেটিই হয়তো ছুঁয়ে গেছে লারাকে।