তুরস্কের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে চলা সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটিয়ে স্বেচ্ছায় নিজেদের আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। গতকাল সোমবার গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, চার দশক ধরে চলমান সহিংসতার অবসান ঘটাতে আঙ্কারার সঙ্গে নতুন শান্তি উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি কংগ্রেস আয়োজনের পর বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর গোষ্ঠীটির বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে অবসান ঘটতে যাচ্ছে তুরস্ক-পিকেকের প্রায় চার দশকের সংঘাতের।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এক সম্মেলন আয়োজন করে দলটি। এরপর গোষ্ঠীটি জানায়, তারা বেশ কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা শিগগিরই সবাইকে জানানো হবে। এ সময় কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের এক বিবৃতিও পাঠ করা হয়, যেখানে পিকেকের বর্তমান-ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজের মতামত ও প্রস্তাব তুলে ধরেন ওজালান। সোমবার প্রকাশিত বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তাদের সশস্ত্র লড়াই কুর্দিদের অধিকার আদায়ের লড়াই। যারা কুর্দিদের অধিকার খর্ব করছিল, তাদের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে পিকেকে। কিন্তু এখন তারা মনে করে, তাদের সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব শেষ হয়েছে। এ কারণে সংগঠনের ১২তম কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়েছেÑ পিকেকের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হবে এবং সশস্ত্র লড়াই বন্ধ করা হবে। বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, পিকেকে নামের যে সশস্ত্র কার্যক্রম চলছিল, তা আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত। এরদোয়ানের একে পার্টির এক মুখপাত্র আলজাজিরাকে বলেছেন, যদি এ সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়, পিকেকের সব শাখা ও অবকাঠামো যদি একেবারে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে তুরস্কের ভবিষ্যৎ ও রাজনীতির জন্য এটি হবে একটি বড় বাঁকবদল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘোষণার পর তুরস্ক ও পিকেকের দীর্ঘদিনের সংঘাত শেষ হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে।
যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল সিরিয়া ও ইরাকেও।