বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

পদ্মা সেতু দেখতে পর্যটকের উপচে পড়া ঢল, নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়

আপডেট : ১০ জুন ২০২৫, ০৬:১০ পিএম

ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে এখন জমজমাট হয়ে পড়েছে। ভ্রমণ পিয়াসীরা ঘরের বাইরে কিছুটা আনন্দময় সময় কাটাতে ও প্রচণ্ড গরমে প্রিয় মানুষকে নিয়ে স্নিগ্ধ বাতাসের খুঁজে ছুটছেন পদ্মার পাড়ে। ছুটির সুযোগে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়া, ইলিশ খেতে শিমুলিয়া ঘাটে ছুটে যাওয়া মানুষের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। নদী তীরে দাঁড়িয়ে গোধূলির সোনালী আলোয় নদী ও সেতুর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করতে ভুল করছে না কেউ। সেই সাথে নৌভ্রমণ দিচ্ছে বাড়তি আনন্দ। 

এদিকে পর্যটকদের ভিড়ে মাওয়া, শিমুলিয়া ঘাট এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে যানজট। এতে মাওয়া চৌরাস্তা থেকে পুরাতন ঘাট পর্যন্ত চলাচলে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। সে সাথে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। টুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা নেই বললেই চলে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের বিভিন্ন জায়গায় এখন বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। দেশের সুনামধন্য প্রজেক্ট হিলসা, লিভ লাউঞ্জ, শখের হাঁড়ি, মাওয়া রিসোর্টের মতো গড়ে উঠেছে নানান রকমের হোটেল রেস্তোরাঁসহ রিসোর্ট। এসব নামি-দামি রেস্তোরাঁয় খেতে আসা বা শিমুলিয়া ঘাট ও পদ্মা সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপর ঘটছে নানা ধরবেন অপ্রীতিকর ঘটনা। কখনও চুরি, ছিনতাইসহ ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটছে। এতে ভয়ে পর্যটকদের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে তুলনামূলক কম বলে দাবি করছেন হোটেল রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। 

রেজাউল করিম ও শিউলী আক্তার শুভ্র নামক এক দম্পতি জানান, মিরপুর থেকে পদ্মা সেতু দেখতে আসছি। মোটর সাইকেল রেখে নদীর পাড়ে গিয়েছি এসে দেখি হেলমেট দুইটি নেই। এভাবে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে হেলমেট চুরি করে নিয়ে গেলো। এই অভিযোগটি টুরিস্ট পুলিশকে দিবো কিন্তু তাদের খোঁজে পাচ্ছি না। 

আরেক পর্যটক ইয়াসিন হাওলাদার বলেন, শিমুলিয়া ঘাটে চোর দিয়ে ভরা। চোখের পলকে আমার মোবাইলটা ভিড়ের মধ্যে পকেট থেকে নিয়ে গিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? এখন থানায় জিডি করতে যাবো। শান্তা আক্তার বলেন, ঘাটে সব কিছু দাম বেশি প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই। 

পদ্মা সেতু ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। স্বপ্নের এই সেতু চালুর পর থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে ঈদ বা সরকারি ছুটিতে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ পিপাসু দেখা মিলে। এসব মানুষের চাহিদা মেটাতে পদ্মার দুই পারের মানুষের যেন আন্তরিকতার কমতি নেই। আতিথেয়তার সবটুকু দরদ দিয়েই পর্যটকদের সেবা দিচ্ছেন তারা। আদি পেশা বদল করে মাওয়ার অনেকেই এখন পর্যটন কেন্দ্রিক নতুন ব্যবসা কিংবা অন্য পেশায় আত্মনিয়োগ করছেন। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও চোর, ছিনতাইকারীর জন্য পর্যটন শিল্পে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজ। নিরাপত্তার চাদরে মোড়াতে না পাড়লে দিন দিন পর্যটক সংখ্যা কমতে থাকবে। 

এ বিষয়ে পদ্মা সেতুর উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, ঈদের আগে পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লাখ মানুষের উপচে পড়া ঢল নামে। ঈদের দিন থেকে পদ্মা সেতু, শিমুলিয়া ঘাটসহ আশেপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের চাপ। আমাদের আইনশৃঙ্খলা সার্বক্ষণিক টহলে থাকেন। সে সাথে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। 

তিনি আরও জানান, এরকম টুকটাক অভিযোগ অনেকেই দিবেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের বড় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত