ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ১০ বছর পর মধুর ক্যান্টিনে এসেছে ছাত্রদল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে এসে দুই ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থান করেন।
এর আগে ২০১০ সালের ২২ জুন ঢাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল মতিন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ওবাদুল হক নাসিরসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মধুর ক্যান্টিনে এলে তাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর মধুর ক্যান্টিনে বিএনপির সহযোগী এই ছাত্রসংগঠনের অবস্থান দেখা যায়নি।
সকালে ছাত্রদলের নেতারা মধুর ক্যান্টিনে ঢুকে ছাত্রলীগ ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। এরপর বাম সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। রেওয়াজ অনুযায়ী, মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের পাশের টেবিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বসেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের টেবিলের সামনে-পেছন থেকে স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বেলা সোয়া ১১টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে গেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তখন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলতে থাকে। একপর্যায়ে ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদককে স্লোগান না দিতে অনুরোধ করেন। তখন দুই পক্ষ স্লোগান বন্ধ রাখে।
পরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ১০ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। তাই ক্যাম্পাস এবং হলে আমাদের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রশাসন ও অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। ন্যূনতম তিন মাস সহাবস্থানের পর ডাকসুর নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার পর ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছি আমরা। ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে নিয়ে আসার দাবিতে আমরা এখনো অটল আছি। সামগ্রিক পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার পর পুনরায় তফসিল ঘোষণা করতে হবে।’
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে মধুর ক্যান্টিনে আসতে সহযোগিতা করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে ধন্যবাদ জানাই। সামনেও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকলের সহযোগিতা পাব বলে আশা করি।’
অন্যদিকে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে সেটা আজকে প্রমাণ হয়ে গেছে। যার যার রাজনীতি সে করবে। ছাত্রলীগ কাউকে বাধা দেবে না।’
আগামী ১১ মার্চ দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর গত মঙ্গলবার স্বাগত জানিয়ে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। তবে ক্যাম্পাসে স্থায়ী সহাবস্থান নিশ্চিত করে পুনরায় তফসিলের দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল।