কক্সবাজারের টেকনাফে এক রাতে বিজিবির সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বাবা-ছেলেসহ চারজন নিহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের নয়াপাড়া ও সাবাংয়ের পুরাতন মগপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা ইয়াবার কারবারি ছিল বলে বিজিবি ও পুলিশ দাবি করেছে। তারা সবাই টেকনাফের বাসিন্দা।
নিহতরা হলো টেকনাফ পৌর এলাকার ডেইলপাড়ার আবদুস শুক্কুর (৪৮) ও তার ছেলে মো. ইলিয়াস (২৫)। হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ার জানে আলমের ছেলে নজির আহমদ (৪০), নয়াপাড়ার মোহাম্মদ জাকারিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৪০)। এদিকে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানের ফুলহার গ্রাম সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক যুবক নিহত হয়েছে। তার নাম সেলিম হোসেন (৪২)। সে হত্যা-ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় সিরাজদীখান থানার কনস্টেবল রাসেল ও এসআই হাসান আক্তার আহত হয়েছে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ১০২ জন শীর্ষ ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণের পরও মিয়ানমার থেকে আসছে ইয়াবা। প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে ইয়াবার বড় চালান, কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যাচ্ছে ‘মাদক কারবারিরা’। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরেÑ
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, শুক্রবার ভোররাতে ইয়াবা কারবারিদের দুটি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির খবরে পুলিশের একটি দল হোয়াইক্যংয়ের নয়াপাড়ায় গেলে ইয়াবা কারবারিরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ নজির ও গিয়াসকে উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ৬০০০ ইয়াবা, দুটি দেশি বন্দুক ও চারটি গুলি পাওয়া যায়। নিহত দুজনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আছাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে নাফ নদী হয়ে একটি ইয়াবার চালান আসার খবর পেয়ে বিজিবির একটি দল ভোররাতে সাবরাংয়ের পুরাতন মগপাড়ায় অবস্থান নেয়। এ সময় তাদের লক্ষ করে গুলি ছোড়া হলে বিজিবি সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলি থামলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ শুক্কুর ও তার ছেলে ইলিয়াসকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে এক লাখ ইয়াবা, একটি দেশি বন্দুক ও একটি গুলি পাওয়া গেছে।
মুন্সীগঞ্জ সিরাজদীখান ও টঙ্গিবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান বলেন, একাধিক মামলার আসামি সেলিমকে ধরতে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সিরাজদীখান উপজেলার ফুলহার গ্রামসংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীতে অভিযানে গেলে একটি ট্রলার থেকে পুলিশের দিকে গুলি ছোড়া হয়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে। গোলাগুলি থেমে গেলে নদীর অপর তীরে নোঙর করে থাকা ট্রলারে সেলিমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের আলোচিত আলমাস হত্যা মামলার আসামি সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও ডাকাতির অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনেক মামলা আছে। এ ঘটনায় আহত সিরাজদীখান থানার কনস্টেবল রাসেল ও এসআই হাসান আক্তারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।