নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পক্ষে মত দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা। একই সঙ্গে শেয়ারবাজারেও কালো টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সাদা করার সুযোগের দাবি তোলা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পক্ষে আওয়ামী লীগের তিন সংসদ সদস্য জোরালো বক্তব্য রাখেন। আর একজন সংসদ সদস্য শেয়ারবাজারেও কালো টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সাদা করার সুযোগ দেওয়ার দাবি তোলেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর শুরু হওয়া সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান।
আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ অতীতেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল উল্লেখ করে বলেন, সরকার কর ফাঁকি দাতাদের বিশেষ সুবিধা দিলেও সৎ করদাতাদের সঙ্গে বৈষম্য করতে পারে না। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বৈষম্যমূলক ও অনৈতিক।
তিনি বলেন, দুই মাস ধরে শেয়ারবাজার একেবারে তলানিতে, সেখানে সম্ভব হলে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাই। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করবেন।’
তিনি সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ির ওপর শুল্ক বসানোর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা নতুন সংসদ সদস্য। এটা করতে পারেন, যারা বিগত দিনে সংসদ সদস্য হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে, আমাদের (প্রথমবার নির্বাচিত) ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।’
দেশে দুর্নীতি প্রসঙ্গে নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘দুর্নীতি শব্দটি এখন সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়। এমন সব ব্যক্তির নাম সংবাদমাধ্যমে আসছে, তাতে আমাদের বিব্রত হতে হচ্ছে। বড় বড় পদে থেকে এত দুর্নীতি করা হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না।’
আওয়ামী লীগদলীয় আরেক সংসদ সদস্য আবু জাহির বলেন, অনেকেই সমালোচনা করছে যে, এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিএনপির আমলে অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান কালো টাকা সাদা করেছিলেন। বিএনপি ও এরশাদের আমলে বাজেট ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাত। এখন সেটা হয় না। এখন মানুষ উল্লাস দেখায়।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নিলুফার আনজুম বলেন, বাজেটে এটা নতুন কিছু নয়। ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক বসানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এটা একটা যুগান্তকারী প্রস্তাব।
আওয়ামী লীগের আরেক সদস্য কাজী কেরামত আলী খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে। অনেকেই ঋণ নিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করেন। এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
বাজেট আলোচনায় আরও অংশ নেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এসএম কামাল হোসেন, নাইমুজ্জামান, হাবিবুন নাহার, তৌহিদুজ্জামান, এইচএম ইব্রাহীম, আবুল কালাম আজাদ, মঈনুল হাসান খান, মাহবুব রহমান এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার প্রমুখ।