আর কয়েক ঘন্টা পরেই ইউরোর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে স্পেন ও ফ্রান্স। ইউরোপের এ দুই ঐতিহ্যবাহী দল মুখোমুখি হওয়া মানেই ফুটবল সৌন্দর্যে্য দর্শককুলের মনের প্রশান্তি মেটা। বড় মঞ্চে দুদলই এক অপরকে চেনে হাড়ে হাড়ে। আজ রাত ১টার সেমিফাইনালের আগে চলুন দেখে নেওয়া যাক স্পেন-ফ্রান্সের কিছু মনে রাখার মতো দ্বৈরথ।
ইউরো ফাইনাল, ১৯৮৪
ফ্রান্স ২-০ স্পেন
এর ঠিক দুবছর আগে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়। এর পর ঘরের মাঠে ইউরোর আয়োজক হয়ে পায় সাফল্যের স্বাদ। টানা হ্যাটট্রিকসহ ৪ ম্যাচে ৮ গোল করে ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলেন মিশেল প্লাতিনি। তিনি সঙ্গে পেয়েছিলেন লুইস ফার্নান্দেজ, অ্যালেইস গিরেসে এবং জঁ টিগানার মতো তারকাদের। যাদেরকে একসঙ্গে ডাকা হতো ‘ম্যাজিক স্কয়ার’ নামে। ওই ফ্রান্সের সামনে টিকতেই পারেনি তখনকার স্পেন। প্রথম গোলটি এসেছিল প্লাতিনির পা থেকেই। আসরে মোট ৯ গোল করেছিলেন এ কিংবদন্তি। ব্রুনো বেলোনে করেছিলেন ব্যবধান দ্বিগুণ।
ইউরো কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০০০
ফ্রান্স ২-১ স্পেন
১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স ফেভারিট হিসেবেই ইউরো শুরু করে। তবে গ্রুপ পর্বের খেলায় নেদারল্যান্ডসের সামনে রানার আপ হয়েই নকআউটে উঠতে হয়। দুই দলের ক্লাসিক কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে দুর্দান্ত ফ্রিকিকে ফরাসিদের এগিয়ে দেন জিনেদিন জিদান। ৬ মিনিট বাদেই গোল শোধ দেয় স্পেন। পেনাল্টি থেকে স্কোর করেন গাইজকা মেনদিয়েতা। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ফের লিড নেয় ফ্রান্স। দ্বিতীয়ার্ধে আবার পেনাল্টি পেলেও তা মিস করেন রাউল।
বিশ্বকাপ শেষ ষোলো, ২০০৬
ফ্রান্স ৩-১ স্পেন
২০০৬ বিশ্বকাপে বদলা নেওয়ার দারুণ সুযোগ পায় স্পেন। পেনাল্টি থেকে ডেভিড ভিয়া এগিয়েও দেন দলকে। তবে হাল ছাড়েনি ফ্রান্স। বিরতির চার মিনিট আগে গোল শোধ করেন ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি। বিরতির পর প্যাট্রিক ভিয়েরা দ্বিতীয় গোল করেন। আর যোগ করা সময়ে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জিনেদিন জিদান। ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় স্পেনকে।
ইউরো কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১২
স্পেন ২-০ ফ্রান্স
২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত লা রোজারা যেখানেই হাত দিচ্ছিল সেখানেই সোনা ফলছিল। এই চার বছরেই দুবার ইউরোর সঙ্গে বিশ্বকাপও জিতে নেয় স্পেন। নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন জাবি আলোনসো। আর এমন দিনটি আরও স্মরণীয় করে রাখতে করেন জোড়া গোল।
নেশনস লিগ ফাইনাল, ২০২১
ফ্রান্স ২-১ স্পেন
এবারও স্পেন মুখোমুখি হয় ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী দাপুটে ফ্রান্সের সামনে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মিকেল ওয়ারজাবাল এগিয়ে দেন স্পেনকে। আনন্দ মাটি হতে লাগে দুমিনিট। করিম বেনজেমা সমতা টানেন ম্যাচে। আর ৮০তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন এমবাপ্পে। দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নেশন লিগ শিরোপা ঘরে তোলে ফ্রান্স।
৩ বছর আগের ওই ফাইনালের মতো আজও কিলিয়ান এমবাপ্পের দিকেই চেয়ে থাকবে ফ্রান্স ভক্তরা। অন্যদিকে দারুণ ছন্দময় ফুটবল খেলে সেমিতে আসা লুইস দে লা ফুয়েন্তের স্পেন ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ছেড়ে কথা বলবেন না।