কুমিল্লার লালমাইয়ে মায়ের মৃত্যুতে চার ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জানাজায় অংশ নেন হত্যা মামলার আসামি ও কারাগারে থাকা আব্দুল মোতালেব নামের এক যুবলীগ নেতা। তিনি লালমাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি হাতকড়া পরা অবস্থায় উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের দুতিয়াপুরস্থ নিজ বাড়ির পাশের মাঠে মায়ের জানাজায় অংশ নেন। জানাজার নামাজ ও মায়ের লাশ বহনের সময় তার হাতে হাতকড়া ছিল। এমন ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে আব্দুল মোতালেবের মা হাফেজা খাতুনের মৃত্যু হয়। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে আবদুল মোতালেবের প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাকে প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিরুল কায়ছার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি প্রথমে বাড়িতে যান। মৃত মাকে দেখেন। পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এরপর হাতকড়া পরেই মায়ের জানাজায় অংশ নেন। মায়ের লাশের খাটিয়া কাঁধে বহন করেন।
জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে আব্দুল মোতালেব বলেন, আমার নসিব খারাপ। ২০০২ সালে যখন আর্মিরা আমারে ধরছে (গ্রেপ্তার) তখন আমার বাবা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এ বছর আমারে ধরার পর আমার মা মারা গেছেন। সেই বিপদে বাবাকে হারাইছি। এই বিপদে মাকে হারাইছি। আমার মা বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
যুবলীগ নেতার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ১১ ডিসেম্বর বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানকে কোনো মামলা ছাড়াই বাগমারা বাজার থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরদিন সকালে লালমাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল মোতালেব, বাগমারা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মোহন, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহাঙ্গীর আটক আবদুর রহমানকে দেখতে কুমিল্লা ডিবি কার্যালয়ে যান। তখন ডিবি পুলিশ তাদেরকেও গ্রেপ্তার দেখায়।
লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে কারাগারে থাকা মোতালেব মায়ের জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেছেন। জেলা পুলিশের একটি টিম তাকে বাড়িতে এনে জানাজা শেষে আবার নিয়ে গেছে। আমাদের থানা পুলিশের একটি টিমও নিরাপত্তা সহায়তায় সেখানে ছিল।