রোজায় ইফতারে রসালো ফলের কদর চিরকালের। দাম বেশি থাকায় ইফতারিতে অনেকের নাগালের বাইরে থাকে ফল। তবে এবার কমেছে দেশি ফলের দাম। গত বছর নভেম্বরে সরকারের নেওয়া এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুল্ক কমানোয় খেজুরের দাম রয়েছে হাতের নাগালে। তবে আমদানিকৃত সব ফলের দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গেল বছরের তুলনায় সব ধরনের দেশি ফলের দাম কেজিতে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। ইফতারে চাহিদার শীর্ষে থাকা তরমুজ কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। এখন তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
গতকাল রবিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে, যা গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে প্রতি কেজি পেয়ারার দাম কমেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা বাজারের ফল বিক্রেতা মো. আসলাম আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশি ফলের ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে পর্যাপ্ত ফলের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে আমদানিকৃত ফলের দাম বাড়ালেও দেশি ফলের চাহিদা বর্তমানে বেশি। এ ছাড়া গেল বছর থেকে এবার দেশিও সব ধরনের ফলের দাম অনেক কমেছে।
পেয়ারা ছাড়া অন্য ফলের বাজার ঘুরে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। তরমুজের দাম এবার ভোক্তার নাগালের মধ্যে রয়েছে। অন্তত ৩০ টাকা কমে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। যা গেল বার বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। একইভাবে দাম কমে প্রতি কেজি বরই বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। প্রতিপিস আনারস প্রকারভেদে ৩০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ১১০-১৩০ টাকা কেজি, প্রতি পিস বেল ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের তরমুজ বিক্রেতার রাসেল মোল্লা দেশ রূপান্তরকে বলে, গত ৫ বছরের রোজায় তরমুজ এতটা কম দামে বিক্রি হয়নি। গেল বারও একই সময়ে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করেছি ৭০ টাকা করে। এবার তা বিক্রি করছি ৫০ টাকায়। ঘাট থেকে কম দামে কিনতে পারায় ভোক্তার কাছের কম লাভে বিক্রি করতে পারছি।
অন্যদিকে ফলের বাজারে অধিকাংশ দেশিও ফলের দাম কম থাকলে আমদানিকৃত ফলের মতো কলার দামও চড়েছে। ডজন প্রতি অন্তত ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কলা। বাজারে প্রতি ডজন কলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। কোনো কোনো বাজারে প্রতি ডজন কলা ১৪০ টাকা ও বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে।
মহাখালী কাঁচা বাজারের ফল বিক্রেতা আমির মোল্লা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এবারে কলার দামটা একটু বেশি। সর্ব নিম্ন প্রতি ডজন কলা বিক্রি করতে হচ্ছে ৮০ টাকায়। সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় এক ডজন সবরিকলা বিক্রি করছি।’
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ববোর্ড (এনবিআর) বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে। তাতে ফল আমদানি যেমন খরচ বেড়েছে তেমনি আমদানি কিছুটা কমেছে। ফলে বাজারে সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজিতে মাল্টার দাম বেড়েছে ৫০-৮০ টাকা। বাজারে দেশি মাল্টার সরবরাহ কম, তাতে ২২০ টাকা কেজির আমদানি করা মাল্টা কিনতে হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশি কমলার দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কমলার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি আপেলের দামও। আপেলের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। বাজারে সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে।