শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের ডানহাত হিসেবে পরিচিত হেজাজ ওরফে এজাজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, শারীরিক অসুস্থতার জন্য আজ ভোরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানান, কিছুদিন আগে যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন এজাজ। পরে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। এরপর জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত দুইদিন যাবৎ তার প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। পরে সংবাদের প্রেক্ষিতে তাকে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ তাকে শনিবার সকালে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সন্ধ্যার আগে তিনি মারা যান।
স্বজনদের কাছ থেকে লাশটি এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। আইন অনুযায়ী ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হবে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক। তিনি জানান, শনিবার ভোরে ডিবি পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সন্ধ্যার দিকে ডায়ালাইসিস করার সময় তিনি মারা যান। এরপরই স্বজন ও বন্ধুরা তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে জোর করে নিয়ে চলে যায়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
মৃতের বাবা শাহ আলম খান বলেন, তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায়। ৪ সন্তানের জনক হেজাজ। সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে জিগাতলা এলাকায় থাকতেন। ডিসের ব্যবসা করতেন তিনি। গত ১০ মার্চ মোহাম্মদপুর বাড়ৈখালী এলাকায় ইফতার পার্টি থেকে এজাজকে ধরে নিয়ে যায় যৌথবাহিনী। মোহাম্মদপুর থানার মাধ্যমে কারগারে পাঠায় তাকে। দুইদিন পর জামিনে বের হয়। তবে অসুস্থ থাকায় ধানমন্ডি জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
তিনি বলেন, আমার ছেলের কিডনিতে পাথর ছিল। তবে সে এত অসুস্থ ছিল না। তখন তার কিডনির পয়েন্ট ছিল ১.৪২। গ্রেপ্তার হওয়ার পর মারধরের কারণে তার কিডনির পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হয়।
তিনি আরও বলেন, শনিবার সকালে ডিবি পুলিশ আমার ছেলেকে ধানমন্ডির হাসপাতাল থেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বিকেল ৫টার দিকে তাকে নেওয়া হয় কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে। সেখানে সন্ধ্যার দিকে মারা যায় আমার ছেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে আমার ছেলে মারা গেছে। যদি ধানমন্ডি হাসপাতালে ভর্তি থাকত তাহলে আমার ছেলে মারা যেত না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাগরিবের আজানের পরপরই মারা যায় এজাজ। এরপর স্বজনরা জোরপূর্বক মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে চলে যায়। ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পুলিশ আবার অ্যাম্বুলেন্সে করেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে।