সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকার বিদেশি ঋণ পরিশোধ

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি-২০২৫) বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় উভয়ই আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। তবে এ সময়ে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে আট মাসেই গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বৈদেশিক দায়দেনা পরিশোধ বেড়েছে ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

সরকারের বৈদেশিক ঋণের হিসাব সংরক্ষণ করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। গতকাল সংস্থাটি বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ব্যাপক মাত্রায় কমে গেছে। এ সময়ে নতুন করে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ২০৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের। আর অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩১ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের সমান। সর্বমোট ২৩৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ প্রুতিশ্রুতি তিনভাগের এক ভাগ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৬৭৪ কোটি ডলারের। আর অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৪৬ কোটি ১১ লাখ ডলারের। মোট ৭২০ কোটি ডলার।

এদিকে ঋণ ও অনুদানের ছাড়ও কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশে অনুদান এসেছে ২৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। আর ঋণ এসেছে ৩৮৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। দুটো মিলে অর্থ ছাড় হয়েছে ৪১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের সমান। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ ও অনুদান মিলে ছাড় হয়েছিল ৪৯৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট অনেক প্রকল্পের কাজ স্থবির হয়ে পড়ে। আবার গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের কাজ স্থগিত রাখে। এসব কারণে ঋণ ছাড় কমেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈদেশিক ঋণ ছাড় বাড়লে আমাদের রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। কিন্তু অন্যদিকে এটি আমাদের ঋণের চাপ বাড়াতে থাকে, যা দেশের সাধারণ মানুষকেই পরিশোধ করতে হবে। তাছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কিছুটা কৃচ্ছ্রতার নীতি গ্রহণ করে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ইতিবাচক। কারণ আগের সরকারের অনেক অপ্রয়োজনীয় ঋণের কারণে এরই মধ্যে দেশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপে আছে।

এদিকে ঋণ ও অনুদান ছাড় কমলেও অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পরিশোধ বেড়েছে। এ সময়ে সরকার বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করেছে ৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর আসল পরিশোধ করেছে ১৬৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার। মোট পরিশোধ হয়েছে ২৬৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২০৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সুদ পরিশোধ হয়েছিল ৮০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। আর আসল পরিশোধ হয়েছিল ১২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। টাকার অঙ্কে গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পরিশোধ করতে হয়েছিল ২২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এ বছরের একই সময়ে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত