শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

গাজায় হামাসবিরোধী বিক্ষোভ

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৮ এএম

গাজায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথমবারের মতো হামাসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে সংগঠনটির ক্ষমতা ছাড়ার দাবি জানায়। তবে মুখোশ পরা ও অস্ত্রধারী হামাস যোদ্ধারা লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়। তারা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং বেশ কয়েকজনকে মারধর করে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়ায় শত শত মানুষ ‘হামাস চলে যাও’ সেøাগান দিচ্ছে। এ ভিডিওগুলো মূলত হামাসবিরোধী অ্যাকটিভিস্টরা শেয়ার করেছেন। তবে হামাস সমর্থকরা এ বিক্ষোভকে গুরুত্বহীন বলে দাবি করছে এবং অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যা দিয়েছে। এ বিষয়ে হামাস এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ইসলামি জিহাদ সংগঠনের সদস্যদের ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলার এক দিন পরই গাজার উত্তরে এ বিক্ষোভ হলো। এ হামলার জবাবে ইসরায়েল বেইত লাহিয়ার বড় অংশের মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি করে। প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শান্তি প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করেছে বলে ইসরায়েল দাবি করছে। তবে হামাসের অভিযোগ, জানুয়ারিতে হওয়া চুক্তি থেকে সরে এসেছে ইসরায়েল। ১৮ মার্চ বিমান হামলা শুরুর পর থেকে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত ও হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের একজন, বেইত লাহিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ দিয়াব। যিনি এক বছর আগে ইসরায়েলি হামলায় তার ভাইকে হারিয়েছেন এবং যুদ্ধের কারণে তার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কারও স্বার্থরক্ষার জন্য জীবন দিতে রাজি নই। হামাসের উচিত জনগণের কথা শোনা। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যে কণ্ঠস্বর উঠে আসে, সেটিই সবচেয়ে সত্য। বিক্ষোভ থেকে আরও একটি সেøাগান উঠে আসে হামাসের শাসন চাই না, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন চাই না। হামাস ২০০৭ সাল থেকে গাজার একক শাসক হিসেবে রয়েছে। ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তারা প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে সহিংসভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় উন্মুক্ত সমালোচনা বেড়েছে, যদিও সংগঠনটির প্রতি এখনো অনেকের সমর্থন রয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে হামাসের প্রতি সমর্থন কতটা কমেছে, তা নির্ণয় করা কঠিন।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রচেষ্টা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের ফোনালাপ হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে আমিরাতভিত্তিক বার্তা সংস্থা ওয়াম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনকলে গাজার অধিবাসীদের জন্য ত্রাণসহায়তা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন আল নাহিয়ান। এ ছাড়া স্থায়ী শান্তির জন্য দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার জেরে তেল আবিবের বিরুদ্ধে বিশ্ব জুড়ে ক্ষোভ বাড়ছে। এমন অবস্থায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি পুনর্বহালের আহ্বান জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের ভিত্তিতে এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের তাগিদও দিয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত