গেল বছরের ২১ নভেম্বর গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার সাব-ইন্সপেক্টর মোশারফ হোসেনকে বদলি করা হয় রাজশাহী রেঞ্জে। কিন্তু তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে ওই থানায় থেকে যান। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ মার্চ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আবারও বদলির নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ‘মধুর থানা’ ছাড়তে নারাজ তিনি। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে বদলি হওয়া স্থানে যোগ না দিলে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হবে। কে শোনে কার কথা নির্দেশনা যেন অসহায়। এখনো বাসন থানায় দায়িত্ব পালন করছেন ওই সাব-ইন্সপেক্টর।
মোশারফের মতোই ঢাকাসহ সারা দেশে অন্তত সহস্রাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করার পরও তাদের সরানো যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে কনস্টেবল, এসআই, এএসআই, ইন্সপেক্টর ও সহকারী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রয়েছেন। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে খোদ পুলিশ সদর দপ্তরকে।
কিন্তু কেন তাদের সরানো যাচ্ছে না? তাদের শক্তির খুঁটিই বা কোথায়? সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আদেশের পরেও যারা সরছেন না তারা ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে নতুন সমীকরণে যুক্ত। তবে পুলিশের একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছে, যারা নির্দেশ অমান্য করে একই স্থানে থাকছেন তাদের তালিকা করতে পুলিশ সদর দপ্তরকে অবহিত করে ইউনিট প্রধানদের বিশেষ চিঠি দেওয়া হয়েছে। তালিকা আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানান, পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করার পর অনেকেই নানা অজুহাত তুলে মাসের পর মাস থেকে যাচ্ছেন। আবার কেউ নানা মহলে তদবির করে বদলির আদেশও বাতিল করাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ মিথ্যা মেডিকেল রিপোর্ট দাখিল করে সময় বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। সুস্থ থেকেও অসুস্থতার ভান করছেন। পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ এসেছেÑ বদলি হওয়া কর্মকর্তারা ‘বিশেষ সুবিধা’ পেতে দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে থাকছেন। কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ পতিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গোপন শলাপরামর্শ করছেন। পাশাপাশি আত্মগোপনে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দমন-পীড়ীন চালায়। গুলিতে শিক্ষার্থী ও নিরীহ লোকজন, পুলিশ, আনসারসহ দেড় হাজারের মতো প্রাণ হারিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা এই প্রথম। এই নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় এখনো থামছে না। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একপর্যায়ে তিনি গোপনে পালিয়ে যান ভারতে। আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের বড় বড় নেতারা চলে যান আত্মগোপনে। তাদের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষকর্তা থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত আছেন আত্মগোপনে। পুলিশের খাতায় ২০৩ জন পুলিশ সদস্য এখনো কর্মস্থলে আছেন অনুপস্থিত। রিমান্ডে থাকাকালীন ধৃত পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যরাও জিজ্ঞাসাবাদে বলপ্রয়োগ, কার নির্দেশে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে সেই তথ্যও দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থাগুলোর কাছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যরা বেপরোয়ার বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরসহ সরকারের সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশের বলপ্রয়োগ করেছে তাদের বিষয়ে খোজ নেওয়া শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ওইসব কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরসহ পুলিশের সবকটি ইউনিট থেকে কনস্টেবল থেকে শুরু করে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আগের কর্মস্থলেই থাকার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের আস্থাভাজনদের বদলি করা হলেও তারা এখনো সরছেন না।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বদলির আদেশ কার্যকর হচ্ছে না তা সত্য। তবে সবক্ষেত্রে নয়। সারা দেশে অন্তত সহস্রাধিক কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর, ইন্সপেক্টর, সহকারী কমিশনার, সহকারী পুলিশ সুপারকে বদলি করা হলেও তাদের সরানো যাচ্ছে না বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আদেশের পর যারা এখনো নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি তাদের তালিকা করতে ইউনিট প্রধানদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তালিকা আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বদলির নির্দেশ গেলে অনেকেই মিথ্যা মেডিকেল রিপোর্ট দিয়ে মাসের পর মাস থাকার চেষ্টা করছে। আবার কেউ বিভিন্ন মহল দিয়ে তদবির করে বদলির আদেশ বাতিলও করছেন বলে আমরা তথ্য পাচ্ছি।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বদলি হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে একই স্থান আছেন ডিএমপির শেখ সুরাইয়া উর্মি, এসি (প্রকিউরমেন্ট), সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক নাজমা আক্তার ওসি রেশন স্টোর, ডিএমপির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এসআই খবিরুল ও এসআই মাহফুজা, সিআইডির টিআই মানব শাহজাদা, আরওআই আসমাউল হোসনা, আরও-১ এসআই জিয়াউর রহমান, আরও (ফোর্স) এসআই ফুয়াদ বিন রশিদ, এসবির মেস ম্যানেজার এসআই মিলন মিয়া ও আরও-১ মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা জেলার আরও-১ আবদুর রহমান প্রমুখ। তাদের বিরুদ্ধেও আছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। তারা দীর্ঘদিন ধরে একইস্থলে কর্মরত আছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তরের এক নির্দেশনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৮ সদস্যকে বদলি করা হয়েছিল গত ৯ মার্চ। একইসঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের ছাড়পত্র প্রদানের অনুরোধ করা হয়। না হলে ১৬ মার্চ তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হয়েছেন মর্মে গণ্য করার কথা জানানো হয় সেই নির্দেশনায়। কিন্তু পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনাকে থোরাই কেয়ার করেননি জিএমপির ৮ পুলিশ সদস্য। বরং তারা দিব্যি আগের কর্মস্থলে ডিউটি করছেন। বদলি হওয়া এই ৮ এসআই ছাড়াও মাঠ পর্যায়ের অন্তত ৩০/৩৫ জন এসআইকে গত কয়েক মাসে বদলি করা হয়। তবে তাদের ে কেউই বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে পুরনো কর্মস্থলেই রয়ে গেছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনাকে পাত্তা না দেওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
জানা গেছে, গত ৬ এপ্রিল গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৩ পুলিশ সদস্যকে ৩ দিনের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের ছাড়পত্র প্রদান করতে বলা হয়। না হলে সংশ্লিষ্ট ইনচার্জগণ দায়ী থাকবেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কেন্দ্রীয় রিজার্ভ অফিস ছাড়পত্র প্রেরণ সত্ত্বেও পুরনো কর্মস্থলে থেকে যাওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অমান্যসহ প্রশাসনিক কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
বদলিকৃত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বাসন থানার কামাল পাশা, মোশারফ হোসেন, শাহ ফরিদ, সোহাগ চৌধুরী ও তানভীর তুষার, টঙ্গী পশ্চিম থানার কাজী নেওয়াজ, আকরাম খান ও এসএম আল আমিন, টঙ্গী পূর্ব থানার মোহাম্মদ মাহবুব, শফিউল আলম, ইমতিয়াজুর রহমান, ও আব্দুল্লাহ আল রুম্মান, গাছা থানার জহিরুল ইসলাম, ফোরকান মোল্লা ও কামরুল ইসলাম। সদর থানার ইব্রাহিম খলিল ও সাহেব আলী খান, পুবাইল থানার হুমায়ন কবির এবং কোনাবাড়ি থানার রানু খন্দকার।
বাকিরা ট্রাফিক ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। তালিকার প্রথম ১২ জনকে গত জানুয়ারি মাসে বদলি নির্দেশনা দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে ৩ দিনের সবশেষ নোটিস সীমাও পেরিয়ে গেছে। তবুও নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি। বরং পুরনো কর্মস্থলে রয়ে গেছেন।
আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গত বছরের ২১ নভেম্বর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের জারি করা ২২ জনকে বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে বাসন থানার এসআই মোশারফ হোসেনের নাম ১০ নম্বরে। অবিলম্বে নির্দেশনা কার্যকরের কথা বলা হলেও মোশারফ হোসেন এখনো পুরনো কর্মস্থলে রয়েছেন। চলতি বছরের ৯ মার্চ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আরেকটি বদলির নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার ৮ সদস্যের এক নম্বরে এসআই মোশারফ হোসেনের নাম। নির্দেশনায় ১৫ মার্চের মধ্যে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। না হলে ১৬ মার্চ তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বা স্ট্যান্ড রিলিজ হয়েছেন মর্মে গণ্য করার কথা জানানো হয় সেই নির্দেশনায়। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও বদলিকৃত নতুন কর্মস্থল রাজশাহী রেঞ্জে যোগ দেননি মোশারফ হোসেন।
এসআই মোশারফ হোসেনের বাড়ি টাঙ্গাইল হলেও কিশোরগঞ্জ শ্বশুরবাড়ি হওয়ায় গত এক যুগ চাকরি করেছেন আওয়ামী পরিচয়ে। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে দহরম মহরম সম্পর্ক ছাড়াও নিজেকে সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকটজন বলে পরিচয় দিতেন। টানা এক যুগ ধরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় কর্মরত রয়েছেন মোশারফ। গাছা এবং কোনাবাড়ি থানায় কর্মরত থাকাকালে বিএনপি-জামায়াত নিধনের মূল ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অপকর্মের শেষ নেই। কোনাবাড়ি থানায় থাকার সময় আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কাশিমপুর থানা এলাকার ঘটনা তদন্ত করেন। ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে বিএনপি সাজার চেষ্টা করছেন মোশারফ হোসেন। একই তালিকায় বাসন থানার এসআই শাহ ফরিদ ও সোহাগ চৌধুরীকে বদলি করা হয় সিলেট রেঞ্জে। মাস পেরিয়ে গেলেও তারা পুরনো কর্মস্থলে রয়ে গেছেন। দুজনের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির পাহাড়সম অভিযোগ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মরত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য বদলির পরও নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি, তারা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িত। আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী এসব পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার অভিযানের আগেই তথ্য ফাঁস করে দেন, বিনিময়ে ফায়দা নেন। পুলিশের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসলেও রহস্যজনক কারণে বদলি কার্যকর হয় না। যা পুলিশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও। তবে এসআই পর্যায়ের আরেক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, বছরের পর বছর একই এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এসআইদের সঙ্গে সাবেক সরকারের নেতা কর্মীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। সুবিধার বিনিময়ে দহরম মহরম সম্পর্কে গড়ে তোলার ফলে কোনো গ্রেপ্তার অভিযানের আগেই এসব পুলিশ সদস্যরা তথ্য ফাঁস করে দেন। এমনকি আশ্রয়-প্রশ্রয়ও দেন। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতনরাও জানেন। কিন্তু তারা অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে যান। ফলে নির্দেশনার পরও বদলি কার্যকর হয় না।
অভিযোগ আছে, মহানগর পুলিশের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে এসআই পর্যায়ের ওই পুলিশ সদস্যদের বদলি ঠেকান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য জানান, এত রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট। অথচ পুলিশে ঘুষবাণিজ্য একটুও কমেনি। বরং বেড়েছে। বদলির কোনো নির্দেশনা আসলে অন্তত ৫০ হাজার টাকা দিলে সেটি আটকে দেন নগর পুলিশের দুই কর্তা ব্যক্তি। যা এখন ওপেন সিক্রেট। একই এলাকার কর্মস্থলে থাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ফলে পটপরিবর্তনের পরও তারা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরছেন পুলিশকে ম্যানেজ করে। কোথাও কোথাও গোপনে অভিযানের আগাম তথ্য ফাঁস কওে দেন এমন অভিযোগও রয়েছে।