একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি আজ মঙ্গলবার।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বেঞ্চে এই আবেদন শুনানির জন্য তোলা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিচারপতি জুবায়ের রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মঙ্গলবার দিন ধার্য করে আদেশ দেন। আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
ইসরায়েলি হামলায় রক্তাক্ত গাজা, প্রাণ গেল আরও ৩৯ জনেরএর আগে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন, গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায়ে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণের দায়ে তাকে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ সেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ২, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগের সাজা বহাল রাখেন এবং ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দেন।
ওই দিন আসামিপক্ষে ছিলেন প্রয়াত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সুন্দরবন সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় নারী-শিশুসহ ১২ জন আটক
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে একই বছরের ১৯ জুলাই ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। এতে মোট ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।
ওই রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাকে পূর্ণাঙ্গ আপিল করার অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার-সংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুসারে আপিল প্রস্তুত করা হয়েছে এবং আজ তার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
