বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

উপসচিব পদে পদোন্নতিজনিত বিলম্বে বাড়ছে জট

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২১ এএম

৫ আগস্টের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হিড়িক চলছে পদোন্নতি আর রদবদলের। ১৫ বছরে যারা নিজেদের বঞ্চিত দাবি করছেন, তারাও ফিরে পাচ্ছেন পদ-পদবি। পাচ্ছেন গ্রেড অনুযায়ী আর্থিক সুবিধাও। নিয়মিত পদোন্নতির অংশ হিসেবে এরমধ্যেই ২৪তম ও ২৫তম ব্যাচ থেকে যুগ্ম সচিব পদোন্নতিও দিয়েছে সরকার। অথচ ২০২২ সালেই ৫ম গ্রেড, অর্থাৎ উপসচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেও ৩০তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ২৫ ক্যাডার সার্ভিসের ৫১৬ জন কর্মকর্তা এখনো সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এই জট কিন্তু এখানেই থেমে নেই—৩০তম ব্যাচ থেকে শুরু হয়ে তা নিচের ব্যাচগুলোর দিকেও ধীরে ধীরে গড়াচ্ছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাডার এবং ক্যাডার বহির্ভূত মিলে ১৪০৩ জন উপসচিব রয়েছেন। এখন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ৩০তম বিসিএস ব্যাচের উপ-সচিব না হতে পারা কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, দীর্ঘদিন পদবঞ্চিত সিনিয়রদেরও সরকার পদোন্নতি দিয়েছে। তাদের পদের অনুকূলে অর্থছাড়ও হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো ৫ গ্রেড অর্থাৎ উপসচিব হতে পারলাম না।

তারা আরও জানান, ২০১২ সালে চাকরিতে যোগদান করে ১২ বছর ১১ মাস পার করেছেন। কিন্তু পদোন্নতি পাননি। যেখানে ২৯তম বিসিএস কর্তার ১২ বছর ৩ মাসে পদোন্নতি পান। ২৮তম বিসিএস ক্যাডাররা ১১ বছর ১১ মাসে ৫ম গ্রেড পেয়েছেন। 

তারা আরও বলছেন, একই ব্যাচের কাস্টম, ট্যাক্স, পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি ক্যাডারের কর্মকর্তারা ১০ বছর পার হতেই পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হয়েছেন। এরমধ্যে নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের কর্মর্তারা ১০ বছর পরই পদোন্নতি পেয়েছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডাররা ১০ বছর ৫ মাসে অর্জন করেছেন পদোন্নতি। পররাষ্ট্র ক্যাডার ১০ বছর ৬ মাসে পেয়েছেন। গণপূর্ত ক্যাডারদের লেগেছে ১০ বছর ১১ মাস। ৩১তম ব্যাচের পররাষ্ট্র ক্যাডাররা ১১ বছরেই পেয়ে গেছেন উপসচিব পদ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, ৩০তম ব্যাচের বর্তমান বেসিক ৫ম গ্রেডের শুরুর বেসিক। এই কাঠামোতে পদোন্নতি হলে ৩০তম ব্যাচের উপসচিব পদে পদোন্নতি হলে সরকারের রাজস্ব থেকে বাড়তি কোনো খরচ হবে না।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এপিডি শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, ‘৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে কয়েকটি ধাপে নিরীক্ষা শেষ করেছে মন্ত্রণালয়। এখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিভাগীয় একটি সুপারিশ তৈরি করে। সেটির কাজ শেষ। এরই মধ্যে পদোন্নতি সংক্রান্ত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মকর্তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করতে কয়েকটি সংস্থাও প্রতিবেদন দেয়। সেসব প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ না পেলে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হয় না। এ জায়গাতেই বেশ অনেকটা সময় লাগে।’

এপিডি শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আরও জানান, ৩০তম ব্যাচের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদোন্নতির কাজ শেষ করেছে মন্ত্রণালয়। ১৫ বছরে বঞ্চিত দাবি করা অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন থেকে ৭৬৪ জনকে দেওয়া হয়েছে ‘ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি’। এসব কারণেও নিয়মিত পদোন্নতি কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত