ভারত ও পাকিস্তান দ্বন্দ্বের বিষয়ে বাংলাদেশকে অবহিত করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফর আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে এ সফর আয়োজনের ব্যাপারে সম্মতি রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে’ ২৭-২৮ এপ্রিল নির্ধারিত সফরটি এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুপক্ষই পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে সুবিধাজনক সময়ে সফরের নতুন তারিখ নির্ধারণে সম্মত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের হাইকমিশনার আঞ্চলিক বিষয় সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিবকে অবহিত করেন। তিনি পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর আলোকপাত করে পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশে চলমান সফর এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান ব্যবসায়িক ফোরাম সম্পর্কেও অবহিত করেন।’
এ সফরটি বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল। ইসহাক দারের সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু, যেমন অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করা হতো। এ ছাড়া, সফরকালে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল।
সফর স্থগিতের পেছনে সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলা ও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা পরিস্থিতি একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান থেকে আসা সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে, যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে। ফলে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটেই সফরটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ইসহাক দারের ঢাকা সফরের তারিখ নির্ধারণ হয়েছিল। সেই বৈঠকে ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা, সম্পদ বণ্টন ও আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা হয়।
সফরটি সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও উভয় দেশ ভবিষ্যতে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আশাবাদী রয়েছে। দ্রুতই সুবিধাজনক সময়ে নতুন সফরের তারিখ ঠিক করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
