দেশের ৬৪ জেলার ৬৪ উপজেলায় মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ মাটি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। খরিপ মৌসুম উপলক্ষ্যে এ পরীক্ষা সোমবার (৫ মে) থেকে শুরু হয়ে চলবে ৫ জুন পর্যন্ত। উপজেলাগুলোতে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ভ্রাম্যমাণ মৃত্তিকা পরীক্ষাগার (ভ্রাম্যমাণ গাড়ি) গিয়ে কৃষকদের মাটি পরীক্ষা করে দেবে। মাটি পরীক্ষা করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগের সুপারিশসহ কৃষি কার্ড বিতরণ করা হবে কৃষকের মাঝে। যা পেতে কৃষকের ব্যয় হবে মাত্র ২৫ টাকা।
সোমবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে খরিপ মৌসুমের ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা পরীক্ষাগারের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ অনুবিভাগ) মো. জাকির হোসেন।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বেগম সামিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. আনিসুর রহমান প্রমুখ। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানান, মাটি পরীক্ষা করে ফসলের জমিতে সার প্রয়োগ করলে অন্তত ২০-২৫% সার কম লাগে।
মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের বর্তমানে ১০টি গাড়ি রয়েছে। এগুলো ৬৪ জেলার মাটি পরীক্ষায় ব্যবহার হবে। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সার ব্যবহার করে ফসল চাষ করলে কেমিক্যাল সারের ব্যবহার কমে ও জৈব সারের ব্যবহার বাড়বে। তাছাড়া ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
বেগম সামিয়া সুলতানা বলেন, এ কার্যক্রম ১ মাস কাজ করবে। মাটি সংগ্রহের জন্য প্রতি উপজেলায় ৫০ জন করে কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে এবার ৩ হাজার ২০০ জন কৃষকের মাটি পরীক্ষা করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, সোমবার থেকে ৫ জুন পর্যন্ত এক মাস সারা দেশে মাটি পরীক্ষা করা হবে।
ড. আনিসুর রহমান বলেন, সারা বছরে দুবার ও রবি ও খরিপ মৌসুমে মোবাইল ভ্যান গাড়ি দিয়ে মাটি পরীক্ষা করা হয়। মাটি পরীক্ষা করে সার দিলে দেশে বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বছরে সরকার সারে ভর্তুকি দেয় ২৬ হাজার কোটি টাকা। সারা দেশে আমাদের ২৪টি ল্যাব আছে। সেখানে ৫০ টাকা করে দিয়ে যেকোন সময় মাটি পরীক্ষা করা হয়।
তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ৫০ জন কৃষকের মাটি পরীক্ষা করা হবে ও ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তারা পাবে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ফার্টিলাইজার কার্ড তৈরি করা হয়। যা কৃষকরা সার ব্যবহারের জন্য কাজে লাগান।
জানা যায়, গত বছর সারা দেশে মাটি পরীক্ষা করে ২৫ টাকায় কৃষকের যে ফার্টিলাইজার কার্ড দেওয়া হয়েছে তা থেকে মৃত্তিকা ইনস্টিটিউটের ৬০ লাখ টাকা আয় হয়েছে।