চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে, অলিতে-গলিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। গত ১ বছরে অটোরিকশাজনিত দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এসব যান চলাচল, কেনাবেচা, আমদানি-রফতানিতে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এসবের তোয়াক্কা করছে না কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।
চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট পৌরসভার গুরুত্বপর্ণ সড়কে দিব্যি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা।
উচ্চগতিসম্পন্ন এসব মোটরচালিত রিকশায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া এসব রিকশার ব্যাটারি অবৈধ পন্থায় চার্জ করা হয়। তাতে বিদ্যুতের অপচয় বাড়ছে। যে কারণে অফ-পিক আওয়ারেও লো-ভল্টেজ, লোডশেডিং তথা বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। অদক্ষ, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের কারণে ঘটছে প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকার নানা পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিলেও ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা নষ্ট করছে দৈনিক চারটি পরিবারের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ। এই যানবাহন বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না ফটিকছড়ি উপজেলায়। ধারণা করা হচ্ছে, উপজেলা জুড়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলছে।
মো. শাহ আলম নামে এক অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি অটোরিকশায় চার্জ নিতে দৈনিক ৮ ঘণ্টা সময় দিতে হয়। তাই সে সারারাত গাড়িটি চার্জ দিয়ে দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা চালাতে পারে। এসব গাড়িতে ব্যবহার হয় ১২ ভোল্টেজের চারটি ব্যাটারি। হিসেব করে দেখা যায় একটি অটো রিকশা যত ইউনিট বিদ্যুৎ অপচয় করে তা দিয়ে ৪ টি পরিবার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে। ফটিকছড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ সূত্রে জানা যায়, ফটিকছড়িতে মোট বিদ্যুতের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ প্রদানের শিডিউল থাকলেও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ব্যাটারিচালিত যানবাহন বেশ বিদ্যুৎ অপচয় করছে। এসব যানে ৬ ঘণ্টা চার্জ দিলে গড়ে তিন ইউনিট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়৷ ফলে বিদ্যুৎ অপচয় রোধ হলে লোডশেডিং আরো কমিয়ে আনা সম্ভব।
নাজিরহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞার পাত্তা না দিয়ে বিভিন্ন সড়কে চলছে ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশা। এসব যান কিছু ব্যক্তির দাপটে দেদার চলছে। তিনি বলেন, আদালতের ঘোষণার প্রেক্ষিতে এসব অটো রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।