বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

১১ বছরে ভয়াবহ ১০ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:২৩ এএম

ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়োজাহাজ ২৪২ যাত্রী নিয়ে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই বিধ্বস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্র্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানে থাকা কেউই সম্ভবত বেঁচে নেই। উড়োজাহাজটি লোকালয়ে আছড়ে পড়ায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো স্পষ্ট নয়। এ ঘটনা ভারতের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হলো, রয়টার্সের তথ্যের ভিত্তিতে

যুক্তরাষ্ট্র : ২০২৫ সালের ২৯ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির কাছে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ও সামরিক হেলিকপ্টারের মধ্যে মাঝ আকাশে সংঘর্ষে ৬৭ জন আরোহী নিহত হন। স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ওয়াশিংটন জাতীয় বিমানবন্দরের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দক্ষিণ কোরিয়া : ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্ব^রে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে জেজু এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে সীমানা দেওয়ালে ধাক্কা খায়। এতে ১৮১ যাত্রী ও ক্রুর মধ্যে ১৭৯ জন নিহত হন। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা। শুধু দুজন ক্রু বেঁচে যান।

কাজাখস্তান : ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট জে২-৮২৪৩, বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনির উদ্দেশে যাত্রাকালে কাজাখস্তানের আকতাউয়ের কাছে বিধ্বস্ত হয়। ৬৭ আরোহীর মধ্যে ৩৮ জন নিহত হন। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট জানান, উড়োজাহাজটি গ্রোজনিতে অবতরণের চেষ্টাকালে গোলাগুলির মধ্যে পড়ে। তবে মস্কো এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য দেয়নি।

জাপান : ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে জাপান এয়ারলাইনসের একটি এয়ারবাস এ৩৫০ রানওয়েতে অবতরণের সময় কোস্ট গার্ডের একটি ছোট উড়োজাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে। এতে এয়ারবাসের ৩৭৯ যাত্রী ও ক্রু, কোস্ট গার্ডের ছয় ক্রুর মধ্যে পাঁচ জন নিহত হন। সংঘর্ষের পর এয়ারবাসে আগুন ধরে যায়।

চীন : ২০২২ সালের ২১ মার্চ চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের গুয়াংশি অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৩২ যাত্রী ও ক্রু নিহত হয়। এটি গত ২৮ বছরে চীনের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ইরান : ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি তেহরান বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ইরানের রেভুল্যুশনারি গার্ডের গুলিতে ভূপাতিত হয়। এতে ১৭৬ আরোহী নিহত হন। ইরানের বেসামরিক বিমান কর্র্তৃপক্ষ জানায়, রাডার সিস্টেমের ভুল সংযোগ এবং এয়ার ডিফেন্স অপারেটরের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এই ঘটনা ঘটে।

ইথিওপিয়া : ২০১৯ সালের ১০ মার্চ ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ আদ্দিস আবাবা থেকে নাইরোবির পথে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৫৭ যাত্রী ও ক্রু নিহত হয়। এই দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে বিশ্ব জুড়ে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের উড়োজাহাজের উড্ডয়ন বন্ধ করা হয়।

ইন্দোনেশিয়া : ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পর লায়ন এয়ারের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৮৯ যাত্রী ও ক্রু নিহত হন।

মালয়েশিয়া : ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ১৭ আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়। এতে ২৯৮ আরোহী নিহত হন। একই বছর ৮ মার্চ মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। বোয়িং ৭৭৭ মডেলের এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ বা ২৩৯ জন যাত্রীর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত