রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

দাউদকান্দিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ

আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েকদিনের ব্যবধানে মারা গেছে তিনজন। পৌরসভার দু'টি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করেছে ডেঙ্গু কর্ণার। তবে পর্যাপ্ত লোকবলের সংকটে পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। পৌরসভার কয়েকটি গ্রামকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে পৌর প্রশাসন।

জানা যায়, উপজেলার দাউদকান্দি পৌরসদরে ৫নং ও ৬নং ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা গ্রামগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা। গ্রামগুলোতে কোন না কোন পরিবারের সদস্য আক্রান্ত হচ্ছে। বেসরকারী মতে আক্রান্তের সংখ্য প্রায় ৬শতাধিক। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধসহ নানান বয়সের মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছরে উপজেলার সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক আক্রান্ত রোগী এবং রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছে ৩ জন। নিহতরা হলেন- দোনারচর গ্রামের মান্নানের ছেলে ইউসূফ আলী, নাজির চৌধুরীর স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও রাসেলের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার। এতে পুরো পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর খন্দকার বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য আমরা ঝোপঝাড় পরিস্কার, জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ও ফগার মেশিন দিয়ে ঔষধ ছিটানো হচ্ছে। আমার ওয়ার্ডসহ পাশের ওয়ার্ডের তিনজন নিহত হয়েছে।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হাবিবুর রহমান বলেন, এই পর্যন্ত ২৫৮ জনের তথ্য পেয়েছি। পর্যাপ্ত লোকবল সংকট এবং স্থান সংকুলের জন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ড চালু করতে পারিনি, তবে ডেঙ্গু কর্ণার চালু করেছি। কর্ণারে ডেঙ্গু রোগীদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আর পৌরসভার দোনারচর ২০ শয্যা হাসপাতালে শুধু বহির্বিভাগ চালু রয়েছে।

দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে দুটি ওয়ার্ডকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছি। প্রতিদিন ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে মশক নিধন কর্মসূচি চলমান রয়েছে ।

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ নাঈমা ইসলাম বলেন, দাউদকান্দি পৌরসদরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। মশক নিধনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অব্যাহত রেখেছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা বাড়াতে এবং মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে পৌরসভার প্রশাসক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালে লোকবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত