বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

টঙ্গীবাড়ির আলহাজ্বওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় রজতজয়ন্তী

৬ লাখ আদায়ের পর অনুষ্ঠান না হওয়ায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ০৪:৩২ এএম

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের আলহাজ¦ ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী ও পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ  থেকে ৬ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। টাকা উত্তোলনের ৬ মাস কেটে গেলেও অনুষ্ঠান না হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ টাকা ফেরত চেয়ে আন্দোলনে নেমেছে।

বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে রজতজয়ন্তী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফ্রেব্রুয়ারিতে ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।  অনুষ্ঠান আয়োজনে খরচ বাবদ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৫২ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এতে সর্বমোট ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টাকা উত্তোলনের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারা টাকা ফেরত চান। শিক্ষার্থীরা জানায়, টাকা ফেরত চেয়ে গত শনিবার বিকেলে বিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে মানববন্ধন ও মিছিল করেছে তারা।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত মোল্লা বলে, ‘অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ৭০০ করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমাদের অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তাই টাকা ফেরত চাইতে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে বহুবার গিয়েছি। তারা আমাদের কথা শুনছেন না, আবার অনুষ্ঠানও করছেন না। আগামী ৭ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠান না করলে তাদের পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করে ওই শিক্ষার্থী।

একই শ্রেণির অন্য শিক্ষার্থী ইসমাইল শেখ বলেন, ‘রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান করার নামে আমাদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়। শ্রেণি শিক্ষকের কাছে আমরা টাকা জমা দিয়েছি। এখন অনুষ্ঠান করার কোনো খবর নেই। টাকা শিক্ষকদের পকেটেই রয়ে গেছে।’

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘শিক্ষকরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আমরা মা-বাবার কাছ থেকে অনেক কষ্ট করে টাকা পয়সা এনেছি। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা সীমিতভাবে ৭০০ টাকা করে দিয়েছে। কিন্তু প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন।’

অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘অনুষ্ঠানের আয়োজনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। রজতজয়ন্তী উপলক্ষে কনসার্ট নিয়ে তাদের মধ্যে ওই দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ কনসার্টের পক্ষে ও অন্য গ্রুপ বিপক্ষে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে। এমতাবস্থায় রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান করা যাচ্ছে না। আর এ অনুষ্ঠান করতে হলে শিক্ষার্থীপ্রতি খরচ হবে ১ হাজার টাকা। কিন্তু আমার নিয়েছি ৭০০ টাকা করে। ইতিমধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাগ, ক্যাপ, চাবির ছড়া, টি-শার্ট ও মগ কিনেছি। এ ছাড়া বিদ্যালয় মাঠে ডেকোরেশনের কাজের জন্য টাকা খরচ করা হয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত