বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করা স্বল্পতা

আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৭ এএম

হাইপোগ্লাইসিমিয়া বা রক্তে শর্করা স্বল্পতা হলো এমন একটি অবস্থা যখন রক্তের শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। সাধারণত 3.9 mmol/L (70 mg/dL)- )- এর কম। রক্তের শর্করা মাত্রা 3.9 mmol/L (70 mg/dL)- এর নিচে নেমে যায়। রক্তে শর্করার স্বল্পতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লক্ষণ থাকা ও রক্তের শর্করা মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে উপসর্গগুলো দূর হয়ে যায়।

লক্ষণ

দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়, ঘুম ঘুম ভাব হওয়া, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারা, অস্বাভাবিক আচরণ, সহজে রেগে যাওয়া, বিভ্রান্তি হওয়া বা প্রলাপ বকা, উদ্ভ্রম, কথা জড়িয়ে যাওয়া, খিঁচুনি হওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মৃত্যু হতে পারে, যদি হাইপোগ্লাইসিমিয়া তীব্র হয়।

কারণ

উপসর্গগুলো সাধারণত খুব দ্রুত দেখা দেয়। রক্তে শর্করা স্বল্পতার প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ যেমন ইনসুলিন, সালফোনিলইউরিয়া গ্লিকাজিদ সেসব ডায়াবেটিস রোগীর ঝুঁকি বেশি। যারা স্বাভাবিকের তুলনায় কম খায়। শারীরিক পরিশ্রম কম করা। ওষুধ বা ইনসুলিন নেওয়ার পর সময়মতো না খাওয়া। রক্তে শর্করা স্বল্পতার অন্য কারণগুলো হলো : গুরুতর অসুস্থতা, দেহে জীবাণুর সংক্রমণ, বৃক্কীয় বৈকল্য, যকৃতের রোগ।

হরমোনের ঘাটতি।

হাইপোগ্লাইসিমিয়া হলে করণীয়

শর্করাযুক্ত খাবার বা পানীয় খাওয়ার মাধ্যমে হাইপোগ্লাইসিমিয়ার চিকিৎসা করা হয়।  উদাহরণস্বরূপ গ্লুকোজ ট্যাবলেট অথবা জেল, আপেল রস, কোমল পানীয় বা ললিপপ, এক্ষেত্রে ব্যক্তিটিকে অবশ্যই সজ্ঞান ও গলাধঃকরণে সক্ষম হতে হবে। লক্ষ্য হচ্ছে ১০-২০ গ্রাম শর্করা গ্রহণ করা যেন রক্তের শর্করা মাত্রা ন্যূনপক্ষে 3.9 mmol/L (70 mg/dL) পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

যদি কোনো ব্যক্তি মুখে খাবার খেতে না পারে, তাহলে গ্লুকাগন ইনজেকশনের মাধ্যমে বা পাউডার নাসারন্ধ্রে বায়ুক্ষেপণ বা প্রধমন পদ্ধতিতে নিতে হবে। ডায়াবেটিস ভিন্ন অন্য কোনো কারণে হাইপোগ্লাইসিমিয়া হলে অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের হাইপোগ্লাইসিমিয়া প্রতিরোধের জন্য এর উপসর্গ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের ওষুধ, যেমন ইনসুলিন, সালফোনিলইউরিয়া, মেগ্লিটিনাইড প্রভৃতির মাত্রা সমন্বয় করার মাধ্যমে হাইপোগ্লাইসিমিয়া প্রতিরোধ করা যায়।

প্রতিরোধ

হাইপোগ্লাইসিমিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্যশিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে হাইপোগ্লাইসিমিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় এবং এর চিকিৎসাকে সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায। নিয়মিত গ্লুকোজ পরীক্ষা, নমনীয় ইনসুলিন প্রয়োগমাত্রা ও গ্লকোজ ও গ্লুকাগনের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের হাইপোগ্লাইসিমিয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে জ্ঞান সম্পর্কে জানানো এবং (গ্লুকাগন ইনজেকশন দেওয়াসহ) সে-বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা উচিত। রোগীদেরও এ-ব্যাপারে সচেতন করতে হবে এবং লক্ষণ দেখা দেওয়ার শুরুতেই কী উপায় অবলম্বন করে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে, সে-ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রক্তের গ্লুকোজ নিয়মিত পরিমাপ করে স্ব-পরিবীক্ষণ করা। এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরার্মশে থাকা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত