স্বপ্নের ঘর’ ফিল্মটি মুক্তির পর থেকে তেমন কোনো হাইপ ক্রিয়েট করতে পারেনি। হয়তো ফিল্মের প্রচারণাই এর জন্য দায়ী! দেবী, দহন, অ্যাকোয়াম্যানের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল ছবিটি। কিন্তু ফিল্মের ট্রেইলার দেখে অনেকেই অবাক! ট্রেইলার ছিল বেশ সাজানো গোছানো, বলা যায় আন্তর্জাতিক মানের।
তানিম রহমান অংশু ছোট পর্দার জনপ্রিয় পরিচালক, তার কাজগুলো বেশ ইউনিক। বিশেষ করে তার এডিটিং সেন্স অসাধারণ। অনেক আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল তামিম অংশু চলচ্চিত্র নির্মাণে আসবেন। অবশেষে মুক্তি পেল তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘স্বপ্নের ঘর’। এই সিনেমার আগে আর কোনো হরর মুভি বাংলাদেশে এতটা নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়নি। ‘স্বপ্নের ঘর’ আপনাকে দারুণ একটি ফিল দেবে এতটুকু নিশ্চিত। যদিও গল্পের সঙ্গে অনেকেই পরিচিত হতে পারেন, কিন্তু এই ফিল্মের মূল রসদই হলো এর স্মার্ট নির্মাণ। সিনেমাটি তৈরি হয়েছে একটি বিদেশি উপন্যাসের ওপর নির্ভর করে। অভিনয়ের কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে আনিসুর রহমান মিলনের কথা। বেশ অভিজ্ঞ এবং পাকা অভিনেতা তিনি। এই সিনেমায় প্রতিটা ধাপে তিনি নিজের নামের সার্থকতা রেখেছেন। মারিয়া চরিত্রে জাকিয়া বারী মম ছিলেন সিনেমার মূল আকর্ষণ। তাকে ঘিরেই সিনেমাটি আবর্তিত। মম আসলেই ভার্সেটাইল একজন অভিনেত্রী তা বারংবার দেখা যাচ্ছে। এই সিনেমায়ও তার অভিনয় দক্ষতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে কাজী নওশাবা, শিমুল খান ছিলেন অনবদ্য।
বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ফিল্মের নামের সঙ্গে ফিল্মের গল্পের যোগসূত্র নেই বললেই চলে। কিন্তু এই ফিল্মের নামের সঙ্গে গল্পের দারুণ যৌক্তিকতা রয়েছে। অনেক অল্প বাজেট নিয়েও বেশ ভালো ভিএফএক্সের কাজ দেখিয়েছে মুভিটি। ড্রোনশট এবং মেকআপ ছিল দৃষ্টিনন্দন। ছবির গানগুলো শ্রুতিমধুর ও প্রাসঙ্গিক। মম-মিলনের রসায়ন ভালো ছিল। সিনেমাটির ফার্স্ট হাফে ছিল সেøা স্টোরি টেলিং আর সেকেন্ড হাফে ফ্লো ছিল। সিনেমার একমাত্র দৃষ্টিকটু দিক ছিল এর ফাইট সিনগুলো। এগুলো না রাখলেও চলত। তবে পরিচালককে ধন্যবাদ এমন একটি সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। নির্মাণের দিক দিয়ে ২০১৮ সালের সেরা সিনেমাগুলোর একটি ‘স্বপ্নের ঘর’। সিনেমাটি নতুন করে আরও অনেক প্রক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া উচিত।