প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কার শুরুতেই নাজেহাল অবস্থা ইউরোপের। ওই অঞ্চলের দেশগুলোর হাসপাতালগুলো করোনায় আক্রান্তে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। কিছু দেশ ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফায় লকডাউন দিতে শুরু করেছে। করোনার প্রথম ধাক্কার সময় মিডিয়াতে যেমন ইউরোপের নেতাদের সরব উপস্থিতি ছিল, এবারে তা দেখা যাচ্ছে না। উল্টো জাতিসংঘকে বলতে হচ্ছে, মানুষ যেন করোনা নিয়ে হতাশ না হয়ে পড়ে, কারণ হতাশা মহামারীকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ্পে কন্তে দেশে কারফিউ জারি করে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই যদি নভেম্বর মাসের জন্য দেওয়া নতুন নিয়মকে সম্মান জানাই, তাহলে আমরা মহামারীকে নিয়ন্ত্রণ করতে সফল হব। এভাবেই আমরা ক্রমেই লকডাউনের পরিধি কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। সামনেই রয়েছে আমাদের বড়দিনের উৎসব।’ এদিকে এলিসি থেকে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দেশে নতুন লকডাউনের ঘোষণার পাশাপাশি দেশবাসীকে সতর্ক করে দেন। তার মতে, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা প্রথমটির চেয়েও মারাত্মক হতে যাচ্ছে।
বেলজিয়ামে আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। বলা হচ্ছে, ইউরোপের অন্য সব দেশের তুলনায় বেলজিয়ামে আক্রান্তের হার এখন বেশি। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রো দেশজুড়ে কঠোর করোনা নীতিমালা জারি করেছেন। গত মার্চের তুলনায় এবার ইউরোপে করোনা নীতিমালা আরও কঠোর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনার এ মহামারীতে ইউরোপে সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে সরকারগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।
দ্বিতীয়বারের মতো করোনা মহামারীর কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে ইউরোপ। বর্তমানে বিশ্বে করোনায় আক্রান্তদের অর্ধেকই ইউরোপে। ইইউর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা থেকে রক্ষা পেতে অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজের দরকার। কারণ প্রথম ধাক্কায় ইতিমধ্যে ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার নিম্নমুখী হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় বলা হয়, করোনা মহামারীতে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশ্ববাসীর মধ্যে প্রণোদনা কমে গেছে এবং স্বাস্থ্যগত সংকট শুরু হয়েছে। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারগুলো পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।