প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিশেষ আইনের আওতায় সামিট গ্রুপের সঙ্গে নতুন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ-৩) স্থাপনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের করা চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গতকাল সোমবার চুক্তিটি বাতিল করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
চলতি বছর ৩০ মার্চ পেট্রোবাংলা ও সামিট গ্রুপ টার্মিনাল ব্যবহার এবং এফএসআরইউ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত দুটি চুক্তি সই করে। একই দিনে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে প্রতি বছর দেড় মিলিয়ন টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের জন্য ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়, যা ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার কথা।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বর্তমানে যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে, তার একটি সামিটের। সেখানে নতুন আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণের যে চুক্তি সই হয়েছিল সেটি বাস্তবায়িত হলে তা হতো বাংলাদেশের তৃতীয় আর সামিট গ্রুপের মালিকানাধীন দ্বিতীয় টার্মিনাল। সামিট গ্রুপের প্রথম এফএসআরইউটিও রয়েছে মহেশখালীতে। সমালোচনা ও বিতর্ক উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চড়া দামে কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
পেট্রোবাংলার সচিব রুচিরা ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে সামিট গ্রুপের সঙ্গে বিশেষ আইনে সম্পাদিত দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণের চুক্তিটি বাতিল করার আদেশ জারি করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মহেশখালীতে দেশের তৃতীয় ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের খসড়া চুক্তি অনুমোদন করে। চুক্তি অনুযায়ী, টার্মিনাল চালুর পর থেকে ১৫ বছর মেয়াদে দৈনিক ৩ লাখ ডলার (চুক্তিতে উল্লিখিত বিনিময় হার অনুযায়ী ৩ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকার সমপরিমাণ) রিগ্যাসিফিকেশন চার্জ পাওয়ার কথা ছিল সামিট গ্রুপের। ১৫ বছরে টার্মিনালটি থেকে রিগ্যাসিফিকেশন চার্জ বাবদ সামিটের আয় দাঁড়াত অন্তত ১৭ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা (ডলার ১১০ টাকা হারে)।
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সামিট গ্রুপের মালিকানায় থাকা আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।