মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

গণ অনশনের ঘোষণা জবি শিক্ষার্থীদের

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনসহ একাধিক দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। আগামী রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের অভিমুখে এ কর্মসূচি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।  

দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরে কোনো বাধা নেই এবং মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে। তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।  

গণঅনশনের আহ্বানকারী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আপৎকালীন অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, যেসব প্রত্যাশা নিয়ে আমরা এই দাবিগুলো তুলেছিলাম, তার কোনোটিই এখনো আশার আলো দেখাতে পারেনি। প্রশাসন বারবার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই আন্দোলন প্রতিটি প্রান্তিক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং একটি আদর্শ পড়াশোনার পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে।’  

জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতা চাই না বলেই আমরা অনশনে যাচ্ছি। কিন্তু তারা যে আশ্বাস দিয়েছে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। যতক্ষণ না দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে দিচ্ছে ততক্ষণ আমরা আমাদের অনশন চালিয়ে যাবো।’

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান প্রামাণিক বলেন, আমাদের প্রশাসন থেকে সময় দেওয়া হয়েছিল দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার  বিষয়ে। কিন্তু তাদের দেওয়া সময় অতিক্রম হয় কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই আমরা আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছি। তাও তারা কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা পরবর্তীতে আরও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাশিদুল ইসলাম বলেন, সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির পর আমাদের আশার দেখিয়েছিলেন প্রশাসন এবং সরকার। কোনো অগ্রগতি দেখছি না দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়ার রূপরেখা আসার পূর্ব পর্যন্ত আমাদের অনশন কর্মসূচি চলবে।

জবি শাখার ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা।কিন্তু বারবার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অযুহাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে এক ধরনের প্রহসন করে আসছে প্রশাসন। এর জন্যেই আমরা সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে আগামী রবিবার থেকে অনশনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা যে কোনো মূল্যেই হোক আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি পূরণ করেই উঠব ইনশাআল্লাহ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে স্পষ্টভাবে বলেছি। এ বিষয়ে পাঠানো চিঠিও আমাদের হাতে আছে। নতুন ক্যাস্পাসের কাজ বাস্তবায়নে জবি প্রশাসন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ নিয়ে এই পর্যন্ত যা হয়েছে তা পূর্বের স্বৈরাচারি আমলের প্রশাসনের কাজের ফলস্বরূপ। অস্থায়ী আবাসনের কাজও চলমান আছে। এই বিষয়ে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত