সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

এই বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়: মির্জা আব্বাস

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৪ এএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। আজ যখন ভোটের সময় আসছে, এখন বলেন এটা না করলে ভোট হবে না, ওটা না করলে ভোট হবে না। কেন রে ভাই কেন? আওয়ামী লীগ তো দেশটাকে বাপের তালুকদারি ভেবেছিল যার কারণে যা খুশি তাই হয়েছে। আপনারাও কি তাই ভাবেন? এই বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়। এই বাংলাদেশ জনগণের। সুতরাং কথাবার্তা বলার সময়ে হিসাব করে বলবেন। যাতে আমাদের বেহিসাবি কথা বলতে না হয়।’

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকের ভেতরে কিছু লোভী রাজনীতিবিদ আছেন, যারা শুধু বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করে, কার্যকর কোনো বিরোধিতা নয়। এই দলগুলো পাকিস্তান সৃষ্টির লগ্ন থেকে ভারত বিভক্তি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শুধু বিরোধিতাই করে গেল। দেশপ্রেমের লেশমাত্র নেই তাদের ভেতরে। তারা দেশকে ভালোবাসে না। তারা ভালোবাসে যেভাবে হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে, ক্ষমতায় যেতে হবে। আমাদের তো আপত্তি নেই। যদি ভোটে ক্ষমতায় যেতে পারেন আপত্তির কী আছে? ভোটে আসেন। ভোটকে ভয় পান কেন? নির্বাচনকে ভয় পান কেন?’

নির্বাচনের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলো নাম উল্লেখ না করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন, নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, করতে দেওয়া যাবে না, তারা বুকে হাত দিয়ে বলেন, এই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আপনাদের কজন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন? বিএনপির ৪২২ জন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন, শহীদ হয়েছেন এক মাসে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আজকাল অনেক দলের কথা পত্রপত্রিকায় লেখেন না, অনেক দলের খারাপ কথা লেখেন না, ভালো কথা হয়তো লেখেন দুয়েকটা। আর বিএনপির ভালো কথা লেখেন না। খারাপটা লিখে দেন। একটা কথা আছে না, সব পাখি মাছ খায় দোষ করে মাছরাঙা। এখন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে সহজ। মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন, সিলেটি ভাষায় বলতেন... হাড্ডির পাশের মাংস খাইতে খুব মজা লাগে। বিএনপি একটি বড় দল, গোছানো দল, সুন্দর দল। এই দলের বদনাম করতে খুব মজা লাগে মানুষের। বিভিন্ন দল একযোগে, বিভিন্ন টেলিভিশনে, বিভিন্ন ইউটিউবার একযোগে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে। এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে, আমাদের কাজের মাধ্যমে জনগণের পাশে থেকে। তাদের বোঝাতে হবে বিএনপি ছাড়া এ দেশে জনগণের কোনো বন্ধু নেই।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনাদের (দলের নেতাকর্মী) বিরুদ্ধে বদনাম করছে ওইসব লোক। অপকর্ম করে তারা, চাঁদাবাজি, দুষ্কর্ম করে তারা, চাপিয়ে দেয় বিএনপির ওপর। এসব চাঁদাবাজকে প্রতিরোধ, প্রতিহত করতে হবে। মুখের কথা অথবা কাজে। যদি না করেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব বারবার বলেছেন, যদি জনগণের মন থেকে উঠে যান, আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, তার চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন। আপনাদের সবার নামে না, দুই-একজনের নামে অভিযোগ আছে। একটা এলাকায় একশ কর্মী আছে, দুইটা কর্মী বদমাইশি অপকর্ম করে। আমার ৯৮ জন কর্মী তো খারাপ না। সুতরাং দুজন লোকের জন্য আমার সব কর্মী কালিমা লিপ্ত হবে এটা হতে দেওয়া যাবে না। বিএনপিতে কোনো অপকর্মকারী, দুষ্কৃতকারী, চাঁদাবাজের জায়গা হবে না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত