মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

প্রণোদনার ধানে আগাম শিষ, দুশ্চিন্তায় কৃষক

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৪ এএম

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রণোদনার নতুন জাতের হাইব্রিড ধানে আগাম শিষ বেরিয়েছে। এতে কৃষকরা তাদের লক্ষ্যমাত্রা উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ধানে আগাম শিষ বের হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন কৃষি কর্মকর্তা ও বীজ সরবরাহকারী কোম্পানির কর্মকর্তারা। বেশি বয়সের চারা রোপণ, প্রতি গোছায় একটির জায়গায় তিনটি চারা রোপণ ও বিলম্বিত সেচ ব্যবস্থাপনার কারণে এমন হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, উৎপাদনে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে।

সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের গাগলাইল এলাকার কৃষক নূরুল ইসলাম, সিদ্দিক হোসেন, আব্দুল হাই ও ইছহাক মিয়া বলেন, ‘ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৮৯-সহ উফশী জাতের ধানে আরও অন্তত দেড় মাস পর শিষ বের হবে। কিন্তু ‘টিয়া’ ধানে এখনই শিষ বেরিয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে উফশী জাতের ধান উৎপাদন হতো ২৫ মণ। কিন্তু হাইব্রিড ‘টিয়া’ ধান বিঘায় ৩০ মণ হওয়ার কথা থাকলেও এখন কী হবে কে জানে।’

জেলা খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা জানান, এখন পর্যন্ত কোনো কৃষক এ ব্যাপারে জানাননি। তবে সাংবাদিকদের কাছে শুনে তাৎক্ষণিক এলাকায় খবর নেন। সত্যতা পেয়ে বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লাল তীর কোম্পানির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ওমর ফারুককে নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম ও লাল তীরের কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, উফশী জাতের ধানের জীবনকাল ১৬০-১৬৫ দিন। কিন্তু হাইব্রিড টিয়ার জীবনকাল ১৩৫-১৪০ দিন। উফশী ধানের চারা ৩৫-৪০ দিন বয়সে রোপণ করতে হয়। আর টিয়া ধানের চারা ২১ দিন বয়সে রোপণ করার নিয়ম। টিয়া ধানের জীবনকাল ছোট হওয়ার কারণে উফশীর তুলনায় শিষ কিছুদিন আগেই বের হবে। কৃষকরা বলছেন, তারা এক মাসের চারা রোপণ করেছেন। কিন্তু জমি পরিদর্শন করে দেখা যায় দেড় মাসের চারা রোপণ করা হয়েছে। বেশি বয়সের চারা রোপণের কারণে শিষ বের হওয়ার সময়টা কম মনে হচ্ছে। এ ছাড়া হাইব্রিড ধান প্রতি গোছায় একটি চারা রোপণের নিয়ম। কৃষকরা তিনটি করে চারা রোপণ করেছেন। ফলে জমি বেশি ঘন হয়ে গেছে। বিলম্বিত সেচের কারণে হাইব্রিড রোপণ করতে গিয়ে চারার বয়স বেড়ে গিয়েছিল।’

তারা আরও জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরো জমির ধানগাছের শিষ বেরিয়ে যাবে। অল্প কিছু আগাম শিষ বের হলেও ফলনে তেমন বিপর্যয় হবে না। হয়তো ১৯-২০ হতে পারে। তবে কৃষকরা যদি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীতে টিয়া ধান আবাদ করেন, তাহলে এবার সামান্য যে সমস্যা হয়েছে, তাও হবে না।

কৃষি কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘আগাম শিষ বের হওয়ার বিষয়টি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটকে জানিয়েছি, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকেও জানাব।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত