শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আলোচনা সভায় ফখরুল

১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইনকারীরা কী করবে ভালো বুঝি

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৬:২০ এএম

যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে সেটা ভালো করেই বোঝেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এই দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। হত্যা করেছে লাখো নিরীহ মানুষকে। কিন্তু পাকিস্তান এখনো ক্ষমা চায়নি। এ কথা বলছি এ কারণে, একটি গোষ্ঠী এই বিষয়ে আমলে নিচ্ছে না, তারা বলেছ, ’৭১ কোনো ঘটনা না। তারা বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে। তাদের নাম বলতে চাই না। এখন তারা আবার গলা ফুলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছে। ইতিহাস তো ইতিহাস। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।’

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের বারবার বলতে হবে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করত না। আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং, আওয়ামী লীগকে আর কোনো গণতন্ত্রের সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। এটাই এদের চরিত্র। ওরা দেখে, জনগণ যখন ক্ষেপে ওঠে, তখন ওরা এভাবে কর্মীদের অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যায়। এবারও তাই করেছে, জনতার ক্ষোভে ভারতে পালিয়ে গেছে।

কিন্তু বাংলাদেশের মহীয়সী নারী বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ৯ মাস জেলে ছিলেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কার প্রথম শুরু হয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে, পরে করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের মৌলিক সংস্কার কিন্তু বিএনপির হাতে দিয়েই। এখন ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছে তো বিএনপি, ১৬ সালে বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘২০৩০ ভিশন’ দিয়েছেন। সংস্কার কোনো নতুন বিষয় নয়। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের পাহাড় এনেছে। আমরা সংস্কারের প্রস্তাবনায় মতামত দিয়েছি, পক্ষে-বিপক্ষে। আমরা বলেছি, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে আজ ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে। আজ  সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কুতুবের আবির্ভাব হয়েছে। তারা যে বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চায়। আমাদের জানা নেই। দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। যেটা আমরা মেনে নেব না। কারণ সেনাবাহিনী দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়ায়।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ভিত্তি তো বিএনপি করেছে। হঠাৎ করেই একটা বিপ্লব হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মধ্যে উঠে এসেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি খারাপ কাজ করে এমন কথা যেন না শুনতে হয়। এতে সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে। আগামী বাংলাদেশ আপনাদের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বাস করি, ওরা গাড়ি বহর নিয়ে যা করুক, সমস্যা নেই। আমরা জানি ওরা কী করতে পারবে। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার ড মোশাররফ হোসেন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘জনগণের আকাক্সিক্ষত ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে, অসিলা সামনে আনার চেষ্টা করেছে। জনগণ সন্দেহ পোষণ করছে, আমরা কিন্তু বুঝি। কেউ বলছে, সংস্কার আবার স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এগুলো বলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিলম্ব করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। দেশ নির্বাচনমুখী হলে যত ষড়যন্ত্র আসুক না কেন, জনগণ তা মোকাবিলা করবে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও আহমদ আজম খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত