রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মোহাম্মদপুরের মোস্তফা এখনো অধরা

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৩ এএম

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগে নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পাঁচ মামলার আসামি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফাকে (৫৮) গ্রেপ্তারের পর ‘মব’ তৈরি করে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা। গত ১২ মার্চ মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরানোর পর পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেয় একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় সরকারি কাজে বাধাদান ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মামলা হয়েছে। কিন্তু গোলাম মোস্তফাসহ হামলাকারী কাউকেই এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেন ঘটনাস্থলের সামনেই থাকা একটি স্কুলের শিক্ষক-কর্মকর্তারা। ঘটনার সময় মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার সামনে ছিলেন ওই স্কুলের পোশাকধারী নিরাপত্তাপ্রহরীরা। এ সময় নিরাপত্তাপ্রহরীদের সঙ্গে আরও অন্তত ১০ জন অংশ নেন। তারা ছিলেন বহিরাগত ও স্কুলটির স্টাফ।

সূত্র বলছে, গোলাম মোস্তফা ওই স্কুলের তিনজন মালিকের একজন। তাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে শিক্ষক এবং স্টাফদের নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের দোতলা থেকে দ্রুত নিচে নামেন হেড অব স্কুল আনিসুর রহমান সোহাগ ও অন্যরা। নিচে নেমেই নিরাপত্তাপ্রহরী ও তার সঙ্গে থাকা স্টাফদের নির্দেশ দেন গোলাম মোস্তফাকে ছিনিয়ে নেওয়ার। এ সময় অতর্কিতভাবে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। অ্যাভেরোজ নামের ওই স্কুলের নিচতলার সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই সময়কার সব ভিডিও চিত্র ধারণ করা আছে।

এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশকে সরকারি কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ওসমান মাসুম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। তবে এ মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পলাতক গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের অন্যসব ইউনিটও চেষ্টা করছে।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অ্যাভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে থেকে আসামি মোস্তফাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় আসামির চিৎকারে মুহূর্তের মধ্যেই স্কুলটির নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মকর্তারা পুলিশকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ‘মব’ তৈরি করেন। তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেন। পাশাপাশি পুলিশকে টানাহেঁচড়া করে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। এ সময় পুলিশের হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যেতে থাকলে মামলার বাদীসহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স তাকে আটক করার চেষ্টা করলে তিনিসহ অন্যরা কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। আসামিদের মারধরের সময় তারা গোলাম মোস্তফাকে ছিনিয়ে নিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। হামলায় পুলিশের এক সদস্য আহত হলে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক গোলাম মোস্তার বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায়, রামপুরা থানায়, বাড্ডা থানায়, মোহাম্মদপুর থানায়, চকবাজার থানায় এবং পল্লবী থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত