ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তের অভ্যন্তরে ওবাইদুল ইসলাম (৩০) নামের এক বাংলাদেশিকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ গুলিতে করে হত্যা করেছে।
গতকাল রবিবার ভোরে মহেশপুর উপজেলার সীমান্তের ওপারে ভারতের অংশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক হলেন- উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে মো. ওবায়দুল হোসেন।
জানা যায়, ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাদগা থানার মধুপুর এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, রাতে মহেশপুর উপজেলার গোপালপর গ্রামে ৭/৮ জন লোক অবৈধভাবে ভারতে যায়। রাত দেড়টার দিকে তারা বিএসএফের সামনে পড়ে। সে সময় বিএসএফ তাদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন তারা পালিয়ে আবারও বাংলাদেশের ভেতরে চলে আসে। কিন্তু ওবাইদুর রহমানসহ দুজন আসতে পারে না। ওবাইদুর রহমানকে বিএসএফ ধরে ফেলে। বিএসএফ তাকে বস্তায় জড়িয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করে।
সকালে ভারতের অভ্যন্তরে মধুপুর নামক স্থানে একজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। ওই মৃতদেহটি ওবাইদুর রহমানের হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ওমর আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ওবাইদুলের বাড়িতে যান। বাড়িতে সবাই কান্নাকাটি করছেন। তিনি আরও জানান, রাত ১টার দিকে ওপারে গোলাগুলির শব্দ শুনেছে গ্রামবাসী। এতে ধারণা করা হচ্ছে ওবাইদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
যাদবপুর ইউনিয়নের মেম্বর বাবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তিনি সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির সংবাদ শুনেছেন। এ ঘটনার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুল নিখোঁজ রয়েছেন। ওপারে পড়ে থাকা লাশটি ওবাইদুলের হতে পারে।
বিজিবির যাদবপুর বিওপির কমান্ডার হাবিলদার মফিজুল ইসলাম জানান, লোকমুখে তিনি এমন খবর পেয়ে সীমান্তে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তবে এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের কাছে কোনো খবর আসেনি।
ঝিনাইদহ মহেশপুর খালিশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সকালের দিকে ভারতের মধুপুর বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ফোন করে তাকে জানিয়েছেন, ভারতের সীমানার মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সেটা বাংলাদেশি না ভারতীয়দের তা বোঝা যাচ্ছে না। পরে খবর পেয়ে ভারতের বাগদা থানা পুলিশ নিহত ওবায়দুলের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বিস্তারিত তথ্য পরে জানা যাবে বলে জানান কর্মকর্তা।
বান্দরবান সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে তরুণের পা বিচ্ছিন্ন : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এক বাংলাদেশির। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চেরারমাঠ সীমান্ত পিলার এলাকার শূন্যরেখায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তির নাম মো. জুবাইর (২৬)। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেরারমাঠ গ্রামে লম্বামাঠ এলাকার আবদুল হকের ছেলে। জুবাইর এক কন্যাসন্তানের জনক।
জুবাইরের স্বজনরা জানায়, তিনি দুপুরে লাকড়ি আনতে গেলে শূন্যরেখায় পৌঁছালে হঠাৎ বিকট আওয়াজে একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তার বাম পায়ের গোড়ালি উড়ে যায়। আওয়াজ শুনে লোকজন এসে তাকে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মো. মাসরুল হক বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। জুবাইর নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালার বাসিন্দা। তিনি সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা ও ফুলতলী সীমান্তে অন্তত ছয়টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পা হারিয়েছেন সাতজন।
