দেশে গত এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৯৩টি। নিহত ৫৮৮ ও আহত ১ হাজার ১২৪ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৮৬ (১৪.৬২ শতাংশ), শিশু ৭৮ (১৩.২৬ শতাংশ)। ২১৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৯ জন, যা মোট নিহতের ৩৮.৯৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬.৭৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১১৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ১৯.৭২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৭৪ জন, অর্থাৎ ১২.৫৮ শতাংশ। তবে সড়ক দুর্ঘটনা এবার বেশি ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে ৩৯.৪৬ শতাংশ। এ সময়ে সাতটি নৌ-দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত, ৪ জন আহত হয়েছে। ২২টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। গতকাল রোড সেফটি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৩টি (৩৫.৯১ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ২৩৪টি (৩৯.৪৬ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৬টি (১২.৮১ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৬১টি (১০.২৮ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং ৯টি (১.৫১ শতাংশ) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২২৯ জন (৩৮.৯৪ শতাংশ), বাসের যাত্রী ২১ জন (৩.৫৭ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৩৫ জন (৫.৯৫ শতাংশ), প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২৬ জন (৪.৪২ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ১১৯ জন (২০.২৩ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম-আলগামন) ৩১ জন (৫.২৭ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১১ জন (১.৮৭ শতাংশ) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলোর ১৪৬টি (২৪.৬২ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি (৩৯.৯৬ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১৯টি (২০.০৬ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৭৪টি (১২.৪৭ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৭টি (২.৮৬ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-পুলিশ ভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-তেলবাহী ট্যাংকার-ড্রাম ২৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১৩.৯০ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৬ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৪.৬৫ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ২৩.৪৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-টমটম-মাহিন্দ্র-আলগামন) ৩.৭৯ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২.২১ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১.৮৯ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৯৪৯টি। (বাস ১৩২, ট্রাক ১৩৯, কাভার্ড ভ্যান ১৬, পিকআপ ২৩, ট্রাক্টর ১১, ট্রলি ৯, লরি ৯, ড্রামট্রাক ১৭, পুলিশ ভ্যান ১, তেলবাহী ট্যাংকার ৩, মাইক্রোবাস ১৯, প্রাইভেট কার ২৮, অ্যাম্বুলেন্স ৬, জিপ ৪, মোটরসাইকেল ২৩৪, থ্রি-হুইলার ২২৩ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩৬ (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-টমটম-মাহিন্দ্র-আলগামন), বাইসাইকেল-রিকশা ২১ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১৮টি।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৫.৯০ শতাংশ, সকালে ২৮.৮৩ শতাংশ, দুপুরে ১৯.২২ শতাংশ, বিকেলে ১৭.২০ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৭.২৫ শতাংশ এবং রাতে ২১.৫৮ শতাংশ।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৯.১৭ শতাংশ, প্রাণহানি ২৬.১৯ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৭৯ শতাংশ, প্রাণহানি ১১.২২ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০.৫৭ শতাংশ, প্রাণহানি ২২.৪৪ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৬৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৪.৬২ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৪০ শতাংশ, প্রাণহানি ৫.৯৫ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৭৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৬.৪৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.২২ শতাংশ, প্রাণহানি ৫.৪৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.৪১ শতাংশ, প্রাণহানি ৭.৬৫ শতাংশ ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৭৩টি দুর্ঘটনায় ১৫৪ জন নিহত হয়েছেন। রংপুর বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় ৩৫টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম নীলফামারী জেলায়। এ জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।