পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকবে না। তবে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের (এপিবিএন) কাছে মারণাস্ত্র থাকবে। গতকাল সোমবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৯ম সভা শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৈঠকে উপদেষ্টাদের ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের কাছে যেসব মারণাস্ত্র আছে সেগুলো জমা দিতে হবে। কখন থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আজকে (গতকাল) কেবল মিটিংয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তো একটু সময় লাগে। পুলিশ যখন অপারেশনে যাবে তখন কি করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এপিবিএন-এর কাছে মারণাস্ত্র থাকবে। সাধারণ অপারেশনে মরণাস্ত্রের তো দরকার নেই। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখশ চেšধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে পুলিশকে মারণাস্ত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি দেখবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, প্রজ্ঞাপনে যে ধরনের নির্দেশনা আছে আমরা সেভাবেই কাজ করব। এ বিষয়ে সেদিন (শনিবার) বিস্তারিত বলে দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আইন যেটা হয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের।
আওয়ামী লীগ তো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, তারা ঝটিকা মিছিল, রাতে মিছিল করছে এক্ষেত্রে আপনাদের কার্যক্রম কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা যদি আমাদের আগে জানিয়ে দিতে পারেন তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারব। আর গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যদি আমরা জানতে পারি তাহলেও আমরা ব্যবস্থা নেব। আপনারা অবৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেখানে কতগুলো অস্ত্র জমা পড়েছে এবং শেখ হাসিনার সময়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালে কতগুলো অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান এখনো চলছে। তবে আমরা যে পরিমাণ আশা করেছিলাম সে পরিমাণ উদ্ধার করতে পারিনি বা হয়নি। আমরা অবৈধ অস্ত্রের সঠিক সংখ্যা এখন বলতে পারব না।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের লাল পাসপোর্ট বহাল রাখা বৈধ না অবৈধ ছিল সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আমরা যেটা দেখি সাড়ে ৯০০ লাল পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তাহলে তার পাসপোর্ট কেন বহাল রাখা হলো এমন প্রশ্নের জবাব উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে তদন্তের জন্য কমিটি করা হয়েছে। আর তিনি ছিলেন একজন রাষ্ট্রপতি, তার জন্য এটা প্রযোজ্য কি না সেটা দেখতে হবে। তার কাছে এই পাসপোর্ট রাখা বৈধ না অবৈধ ছিল, সেটা তদন্ত করে দেখা হবে। রাষ্ট্রপতিরা কিন্তু কিছু কিছু সুযোগ সুবিধা পায়। তাই প্রটোকলের বাইরে কিছু হয়েছে কি না সেটা দেখা হবে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, গত ৭-৮ মে ২০২ জন বাংলাদেশিকে বিএসএফ বিভিন্ন স্থানে পুশ ইন করে, যারা ২-৩ বছর অথবা ১৫-২০ বছর আগে ভারতে গিয়েছিল। পরে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে পুলিশ ও এসবির মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করে তাদের নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর চেষ্টা চলছে। এদের মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গাকে পাওয়া গেছে। তাদেরকে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।