সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও গ্রেড সংশোধনের দাবি ফিজিওথেরাপিস্ট শিক্ষার্থীদের

আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ০৯:০১ পিএম

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ফিজিওথেরাপিস্ট পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও গ্রেড সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন ফিজিওথেরাপিস্ট ও শিক্ষার্থীরা। সংশোধন করা না হলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচি ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৩ মে) রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এক মানববন্ধন থেকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ফিজিক্যালথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে পেশাজীবী, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (বাপসু)   ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। 

এসময় সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা. সফিউল্লাহ প্রধানিয়্যা বলেন, ‘দেশে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, পঙ্গুত্ব , প্রতিবন্ধী রোগীর সংখ্যা অনেক। অথচ স্বাস্থ্য সেক্টরের একটি ফ্যাসিবাদী চক্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকারি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপিস্ট নিয়োগ দিতে দিচ্ছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রোগীরা। এধরনের ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উপরে ফেলতে হবে।’

বাপসুর সভাপতি মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ নিয়ে এই বিভাগে ভর্তি হন এবং ফিজিওথেরাপির ওপর পাঁচ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে ফিজিওথেরাপিস্ট হন। অথচ সরকারি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বিভাগ নেই। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ফিজিওথেরাপিস্ট পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ফিজিওথেরাপিস্ট পদে কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়নি। সেখানে বলা হয়েছে, এই পদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকলেই আবেদন করতে পারবেন। এই দুই যোগ্যতা দিয়েই যদি ফিজিওথেরাপি হওয়া যেতো তাহলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ভর্তি পরীক্ষায় যুদ্ধ করে ভর্তি হয়ে পাঁচ বছর পড়ার দরকার হতো না। শিগগির এই ঘৃণ্য নিয়োগ বিজ্ঞাপন সংশোধন করা না হলে ছাত্রসমাজ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।’

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদ্যমান ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন আইন ২০১৮’ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি/ব্যাচেলর অব সাইন্স ইন ফিজিওথেরাপি’ ডিগ্রি পাঁচ বছর মেয়াদী এবং এই ডিগ্রিধারীরাই কেবল ফিজিওথেরাপিস্ট। এর বাইরে ফিজিওথেরাপিস্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই । একজন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ শিক্ষার্থী কিভাবে ফিজিওথেরাপিস্ট হয়? এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিরাট সংকট সৃষ্টি করবে ও দেশের সাধারণ নাগরিকরা অপচিকিৎসার শিকার হবেন।’

এই নেতা আরও বলেন, দেশে বর্তমানে ফিজিওথেরাপিস্ট নবম গ্রেডের পদ। অথচ হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ফিজিওথেরাপিস্টদের ১২ তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও এই সার্কুলার ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীদের সংক্ষুব্ধ করছে। এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক চিকিৎসার অন্তরায় সৃষ্টি করবে। অনতিবিলম্বের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও গ্রেড  সংশোধন করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মানববন্ধন শেষে বিপিএ সভাপতি ডা. তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি  দল হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত